বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলবে? অসম নিয়ে তোপ মহুয়ার

কৃষ্ণনগরের জনসভায় তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র বলটাকে তাদের মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে গেলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩২
Share:

মহুয়া মৈত্রর জায়গায় এবার কে। —ফাইল চিত্র।

অসম-কাণ্ড নিয়ে নদিয়ায় গোড়া থেকেই নো-বল করছিল হিন্দু উদ্বাস্তু প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়া বিজেপি। কৃষ্ণনগরের জনসভায় তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র বলটাকে তাদের মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে গেলেন।

Advertisement

রাজ্যের প্রতিনিধি দলের হয়ে অসমের শিলচর বিমানবন্দরে গিয়ে মহুয়ার পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বেরনোর মরিয়া চেষ্টা গোটা দেশ দেখেছে। রবিবার সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগরের পোস্ট অফিস মোড়ের জনসভায় প্রায় সেই মেজাজেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন করিমপুরের বিধায়ক— এত মানুষকে নিয়ে ওরা কী করবে? বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলে দেবে?

বেশ কয়েক দিন ধরেই অসমের নাগরিকত্ব বিতর্ক নিয়ে উত্তপ্ত জেলার রাজনীতি। ময়দান কে নিজের দখলে রাখবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির লড়াই। ইতিমধ্যে অশান্তি হয়েছে মহুয়ার নির্বাচনী এলাকা করিমপুরে। অসম থেকে ফিরে মহুয়া এখনও নিজের এলাকায় যাননি। এ দিন কৃষ্ণনগরের সভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “আমরা কিন্তু গন্ডগোল করতে যাইনি। আমরা গিয়েছিলাম এটা জানতে যে বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কেন এত মানুষের নাম তালিকায় উঠেছে।”

Advertisement

দেশ ভাগের পরে এই নদিয়াতেই ঠাঁই নিয়েছিলেন কয়েক লক্ষ উদ্বাস্তু। এই সংখ্যাটা বর্তমানে ২০ থেকে ২১ লক্ষ বলে দাবি তৃণমূলের। এই বিরাট সংখ্যক ভোটারের বড় অংশ কোন দিকে ঝুঁকবেন, তার উপরেই নির্ভর করছে লোকসভা ভোটের ভাগ্য। তাই তাঁদের, বিশেষত মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের নিজেদের দিকে ধরে রাখতে চেষ্টার কসুর করছে না তৃণমূল। রাজ্য জোড়া ‘কালা দিবস’ পালনের দ্বিতীয় দিনে তাই এই জনসভার আয়োজন। শুরুতেই বক্তৃতা করার পরে জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত অসুস্থ হয়ে মঞ্চ ছেড়ে চলে যান।

কিন্তু হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায়, রানাঘাট (উত্তর-পশ্চিম)-এর বিধায়ক শঙ্কর সিংহ, নাকাশিপাড়ার কল্লোল খাঁ, নবদ্বীপের পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা, কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসেরা। প্রত্যেকেই তাঁর বক্তৃতায় নিশানা করেন বিজেপির বিভাজনের রাজনীতিকেই।

তবে দিনের মুখ্য আকর্ষণ ছিল মহুয়ার থেকে সরাসরি অসমের কথা শোনা। মহুয়া বলেন, “বিমানবন্দরের ছোট্ট জায়গার মধ্যে আমাদের ঘিরে রেখেছিল প্রায় দু’শো পুলিশ। পুলিশ সুপার থেকে এডিজি-র মতো বড়-বড় পুলিশ অফিসার ছিলেন। প্রথমেই আমাদের ব্যারিকেড করে বাঁ দিকে একটা ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বুঝতে পেরে আমরা বাধা দিই। ওরা বলছে, আমি নাকি এক জন কনস্টেবলকে মেরে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছি। ভাবুন এক বার! আমরা মাত্র ছ’জন। আর দু’শো পুলিশ। তার ভিতরেই অস্ত্রহীন অবস্থায় এক জনকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিলাম!”

মহুয়ার কাটাক্ষ, “বাইরে মিডিয়া দাঁড়িয়ে ছিল। আমি মিডিয়াকে সবটা বলার জন্য দৌড় লাগিয়েছিলাম। ওরা বলল, গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। আমরা বললাম, কোথাও যাব না। শেষ পর্যন্ত আমাদের বেআইনি ভাবে প্রিভেনটিভ অ্যারেস্ট করে। আমরা পরাধীন ভারত দেখে এলাম!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement