র‌্যাগি‌ং করে জুটল শাস্তি

ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক যা-ই দাবি করুন না কেন, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি জানিয়ে দিল, এমএ প্রথম বর্ষের ছাত্র মফিকুল শেখের উপরে র‌্যাগিং করা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক যা-ই দাবি করুন না কেন, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি জানিয়ে দিল, এমএ প্রথম বর্ষের ছাত্র মফিকুল শেখের উপরে র‌্যাগিং করা হয়েছিল। কমিটির সুপারিশ মেনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপও করা হচ্ছে।

Advertisement

সোমবার ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শোভন নিয়োগীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির সদস্যেরা। তার পর নোটিস জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে র‌্যাগিংয়ে যুক্ত থাকার অভিযোগে ন’জন আবাসিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। চার জনকে হস্টেল ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সকলেরই তফসিলি ছাত্রভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের চালচলনের উপরে কড়া নজর রাখা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এ দিনই বিকেলে অভিযোগকারী ছাত্র মফিকুল শেখকে ফোন করে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক তাঁদের পদক্ষেপের কথা জানান। বুধবার থেকে তাঁকে কলেজে এসে ক্লাস করতে এবং হস্টেলে থাকতে বলা হয়েছে।

Advertisement

গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত থেকে কলেজের পুরনো হস্টেলে থাকতে শুরু করেছিল মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানার সাদিখাঁরদিয়াড় গ্রামের বাসিন্দা মফিকুল। ওই রাতেই তাঁকে নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। ১০০ ডায়ালে ফোন করে তিনি পুলিশকে খবর দেন। মাঝরাতে কোতোয়ালি থানার পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। পরের দিন বাড়ি ফিরে মফিকুল গোটা ঘটনা জানিয়ে ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি’-কে মেল করে। কমিটি কলেজ কর্তৃপক্ষের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়।

কলেজের তরফে কেউ-কেউ প্রথমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু ন্যাশনাল অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির চিঠি পাওয়ার পরেই কলেজ কর্তৃপক্ষ নড়ে-চড়ে বসেন। কিন্তু কলেজের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার আগেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দাবি করেন, অভিযুক্ত ছাত্রেরা বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাই মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করার জন্য সংবাদমাধ্যমেরই তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া উচিত।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’জন শিক্ষককে নিয়ে গড়া তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেয়ে শাস্তির সুপারিশ করেন। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক এত দিন ফোন ধরছিলেন না। এ দিন ফোনে তিনি বলেন, “অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আমরা ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেছি।” তা হলে প্রথম থেকে কেন বলে এলেন যে তেমন কিছুই ঘটেনি? ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দাবি, “আমি তেমন কিছুই বলতে চাইনি। কোথাও হয়তো ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।”

টিএমসিপির কলেজ ইউনিটের সভাপতি সুজয় হালদার অবশ্য এখনও দাবি করছেন, “যা হয়েছে তা নেহাতই আড্ডা মারতে গিয়ে। ন’জন ছাত্রের শাস্তির পরিমাণ কমানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব।” মফিকুল কিন্তু পিছু হটতে রাজি নন। তিনি বলেন, “ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আমায় ফোন করেছিলেন। আমি জানতে চেয়েছি, আমার সঙ্গে যে এত বড় অন্যায় হল, তার জন্য এই সামান্য শাস্তি? প্রয়োজনে আবার ন্যাশনাল অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটিতে জানাব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement