Jangipur Subdivisional Hospital

হঠাৎ প্রসব, পাশে দাঁড়ালেন মহিলারা

লালগোলার জনার্দনপুর থেকে ৮ মাসের গর্ভাবস্থায় উমরা কুলসন বিবিকে রঘুনাথগঞ্জে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর ননদ সাবিরা খাতুন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আরও এক মহিলা আত্মীয়।

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ০৮:৩৪
Share:

সদ্যোজাতকে নিয়ে বাড়ির লোকজন। নিজস্ব চিত্র।

আলট্রা-সোনোগ্রাফি করাতে এসেছিলেন। সেখানে পৌঁছনোর কিছু আগেই প্রসব-বেদনা ওঠে। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের দোরগোড়ায় রাস্তাতেই শিশুকন্যার জন্ম দিলেন এক মহিলা। শিশুটি যেখানে জন্মায়, তার ১০০ মিটার দূরে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল। সেখানকার অস্থায়ী সুপার সুব্রত মাঝিকে খবর দিলে তিনি হাসপাতাল থেকে কয়েক জন কর্মীকে ঘটনাস্থলে পাঠান। স্ট্রেচারে করে মহিলা এবং সদ্যোজাতকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন তাঁরা। মা ও শিশু আপাতত সুস্থ রয়েছেন। রবিবার সকালে হাসপাতাল চত্বরের বাইরে পুরসভার মার্কেট কমপ্লেক্সে সন্তান প্রসব করেন উমরা কুলসন বিবি নামে ওই মহিলা। তাঁর প্রসবে সাহায্য করেন স্থানীয় মহিলারা।

Advertisement

লালগোলার জনার্দনপুর থেকে ৮ মাসের গর্ভাবস্থায় উমরা কুলসন বিবিকে রঘুনাথগঞ্জে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর ননদ সাবিরা খাতুন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আরও এক মহিলা আত্মীয়। উদ্দেশ্য ছিল, ওই প্রসূতির পেটের ইউএসজি করানো। তার পরে চিকিৎসককে দেখিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তিন জনের। রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় সেই চিকিৎসক চেম্বারে বসেননি। হাসপাতালে চত্বরের বাইরে একটি বেসরকারি সংস্থায় ইউএসজি করাতে ঢুকছিলেন কুলসন। বৌদিকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে তিনি দোতলায় যখন উঠছেন, তখনই প্রসব বেদনা শুরু হয় কুলসনের। যন্ত্রণায় সিঁড়িতেই বসে পড়েন তিনি।

পাশেই খাবারের দোকান কার্তিক হালদারের। তিনি বলেন, “ওই মহিলাকে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখে বুঝতে পারি, কী ঘটেছে। ১০০ মিটার দূরে মহকুমা হাসপাতাল। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তখন ছিল না। তাঁর সঙ্গী দুই মহিলাও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে অসহায়ের মতো আচরণ করছেন।’’

Advertisement

তাঁদের দেখে এগিয়ে আসেন আরও দুই মহিলা। এঁদের একজন সুতির হিলোড়ার বাসিন্দা সৈমন্তী ঘোষ। পেশায় তিনি আইসিডিএস কর্মী। এরপর ওই প্রসূতিকে নিয়ে যাওয়া হয় সিঁড়ির নীচে একটি ফাঁকা জায়গায়। দু’টি কাপড় টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সেখানেই কন্যাসন্তান প্রসব করেন কুলসন। কার্তিক বলেন, “এরপর আমরা হাসপাতালের সুপারকে ফোন করি। তিনি সব শুনে মিনিট পাঁচেকের মধ্যে হাসপাতাল থেকে কয়েক জন কর্মীকে পাঠিয়ে দেন। একটি স্ট্রেচারও পাঠান। তাতে করেই মা ও শিশুকন্যাকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।” উমরা কুলসনের আগে একটি ছেলে রয়েছে। ফের তিনি কন্যার মা হওয়ায় তাঁর পরিবারের সকলে খুশি।

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের অস্থায়ী সুপার সুব্রত মাঝি বলেন, ‘‘মা ও মেয়ে দু’জনেই সুস্থ আছেন। স্বাভাবিক ওজনের শিশুর জন্ম দিয়েছেন
ওই মহিলা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement