—ফাইল চিত্র।
ফের বিতর্কের কেন্দ্রে তৃণমূল পরিচালিত কল্যাণী পুরসভার কাউন্সিলর ভক্তিভূষণ রায়। এর আগে পড়শি বিশু দাসের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ বার উঠল জন্ম শংসাপত্র তৈরিতে কারচুপির অভিযোগ।
২০১২ সালে তৃণমূল নেত্রী কাজরী ভাদড়কে বিয়ে করেন ভক্তি। কাজরীর এটি দ্বিতীয় বিয়ে। আগের স্বামী রাজীব চক্রবর্তীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পরে তিনি ভক্তিকে বিয়ে করেন। আগের পক্ষে তাঁর একটি মেয়েও রয়েছে। ২০০২ সালের ২ নভেম্বর তার জন্ম, গত বছর মাধ্যমিক পাশ করেছে সে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ২০১১ সালে ভক্তিকে তার বাবা বলে বলে পরিচয় দিয়ে পুরসভা থেকে জন্ম শংসাপত্র বার করা হয়েছে। এ দিকে রাজীব চক্রবর্তীকে মেয়েটির বাবা হিসেবে দেখিয়েও পুরসভা জন্ম শংসাপত্র দিয়েছিল।
পুরসভায় তৃণমূলেরই কাউন্সিলর লক্ষ্মী ওঁরাও অভিযোগ করেন, জন্মদাতা হিসেবে রাজীবই মেয়েটির বাবা। ভক্তি বড়জোর মেয়েটিকে দত্তক নিতে পারতেন। তার বেশি কিছুই নয়। কিন্তু উনি বিয়ের আগেই কাজরীর সন্তানের পিতৃত্ব জাহির করে বসে আছেন। কাউন্সিলর হিসেবে প্রভাব খাটিয়েই এই কাজ করা হয়েছে বলে লক্ষ্মীর অভিযোগ। এ নিয়ে একাধিক বার পুরপ্রধান, কল্যাণীর মহকুমাশাসক, জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন লক্ষ্মী।
পুরসভা এ ব্যাপারে কী করছে, তা জানতে চেয়ে মহকুমাশাসক ইউনিস রিশিন ইসমাইল পুরপ্রধান ও নির্বাহী আধিকারিককে চিঠি দেন। কিছু দিন আগেই কাউন্সিলরদের বৈঠকে পুরপ্রধান সুশীলকুমার তালুকদার জানান, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ভক্তিকে বাবা দেখিয়ে কাজরীর মেয়ের যে জন্ম শংসাপত্র পুরসভা দিয়েছিল, তা বাতিল করা হবে। সেটি ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে।
ভক্তি অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘আমি কোনও জন্ম শংসাপত্রের আবেদনই করিনি। আমার বদনাম করার জন্য কেউ এই কাজ করেছে। আমাকে বাবা দেখিয়ে শংসাপত্র বার করা হয়েছে।’’ তার মানে কি দলেরই পরিচালিত পুরসভা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ভক্তির জবাব, ‘‘হতে পারে, কেউ ষড়যন্ত্র করছে। বিষয়টি পুরপ্রধানকে জানিয়েছি।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘উনি এমন কিছু আমাকে লিখিত বা মৌখিক ভাবেও জানাননি।’’ কী করে এক জনেরই নামে দু’টি জন্ম শংসাপত্র বেরোল? পুরসভার তরফে তার দায় কে নেবে? পুরপ্রধান বলেন, ‘‘নিশ্চিত ভাবেই ভিতরের কেউ এতে জড়িত। কী করে এমন ঘটল, তদন্ত হবে।’’