ফের নালিশ টাকা চাওয়ার

খোঁজ করলে ফের উঠে আসছে শাসক দলের তোলা আদায় বা কাটমানির পুরনো সেই কাহিনি।

Advertisement

মৃন্ময় সরকার

নবগ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০০:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছাত্রাবাস তৈরির কাজ শেষ। পড়ুয়াদের খাট-বিছানা, পড়াশোনার জন্য টেবিল বেঞ্চির বরাতও সম্পূর্ণ। কিন্তু ত্রুটিহীন আয়োজনে অন্তরায় হয়েছে— ‘ছেলেপুলেরা খাবে কী!’

Advertisement

খোঁজ করলে ফের উঠে আসছে শাসক দলের তোলা আদায় বা কাটমানির পুরনো সেই কাহিনি।

দলনেত্রীর কড়া বার্তার জেরে জেলার আনাচ কানাচে যখন কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়ার হিড়িক, তখন নবগ্রামে অনন্তপুর আলিয়া হাইমাদ্রাসার ছাত্রাবাসের আবাসিকদের পড়ুয়াদের জন্য দু’বেলা রান্না করার বরাত পাওয়া স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর পক্ষে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘কাটমানি দিয়ে রান্না করতে পারব না!’

Advertisement

অভিযোগের আঙুল যাঁদের দিকে তাঁদের অন্যতম ওই মাদ্রাসার পরিচাল সমিতির সম্পাদক নইমুদ্দিন শেখ। অন্য জন তৃণমূলের স্থানীয় মহুরুল অঞ্চল সভাপতি খালেক শেখ।

বছর তিনেক আগেই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবসান তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সরকারি অনুদানে তৈরি সেই ছাত্রাবাসে ছেলে-মেয়েদের খাবার, নৈশপ্রহরা এবং সাফাই কাজের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে নবগ্রামের ১৩টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৩৯ জন মহিলাকে। কিন্তু রীতিমতো সাক্ষাৎকার পর্বের পরে তাঁদের কাছে কাটমানি চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

তিন বছর হয়ে গেলেও সে সমস্য়া মেটেনি। ওই স্বানির্ভর গোষ্ঠীর অভিযোগ, মাদ্রাসার আবাসনে খাবার সরবরাহ-সহ নৈশপ্রহরী ও সাফাইকর্মীর কাজের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা কাটমানি দাবি করা হয়েছে। এবং তার হোতা মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির সম্পাদক নইমুদ্দিন শেখ। একা তিনি নন, এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি খালেক শেখও একই ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘টাকা না দিলে কাজ মিলবে না!’

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী বেগম নার্গিস পরভিন বলছেন, ‘‘এ নিয়ে নবগ্রাম বিডিও থেকে স্থানীয় বিধায়কের কাছেও হত্যে দিয়েছি। কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁরাও কোনও কথাই শুনতে চান না।’’

নার্গিস বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে নইমুদ্দিন তৃণমূলের হয়ে কাজ করতে বলেছিলেন, করেছি। এখ বলছেন টাকা দাও!’’ কিন্তু কোন সাহসে দলনেত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও কাটমানি ফেরতের আবহে নতুন করে টাকা দাবি করছেন ওই তৃণমূল নেতারা। নইমুদ্দিন বলেন, ‘‘ও সব কাটমানির অভিযোগ ডাহা মিথ্যে। কোন স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাজ করবে এই নিয়ে ঝামেলা।’’ তৃণমূলের মহুরুল অঞ্চল সভাপতি খালেক শেখও বলছেন, ‘‘ছাত্রাবাসের কাজ নিয়েই আসলে ঝামেলা, হস্টেল খোলা যাচ্ছে না সে কারণেই।’’ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে পরিচালন সমিতির সঙ্গে কথা বলাই ভাল। আমার কিছু বলা মানে হুমকির মুখে পড়া!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement