অভিযোগ জানানোর পরে কেটে গিয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ। তারপরেও মূক ও বধির তরুণী ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারল না হোগলবেড়িয়া থানার পুলিশ। ওই তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, গাজু শেখ নামে পড়শি ওই যুবক নিয়মিত ফোনে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এলাকাতেও তাকে ঘুরতে দেখেছেন অনেকেই। অথচ থানার ওসি রাজশেখর পাল নির্বিকার গলায় বলছেন, ‘‘আমরা তো গাজুর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছি। কিন্তু তাকে খুঁজে না পেলে কী করব বলুন?’’
পুলিশের এমন ভূমিকায় আস্থা রাখতে না পেরে ওই তরুণীর পরিবার মঙ্গলবার বিকেলে দ্বারস্থ হয়েছিলেন তেহট্টের এসডিপিও দীপক সরকারের কাছে। সেখানে তারা একটি লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন। দীপকবাবুর আশ্বাস, ‘‘অভিযুক্ত এখনও কেন গ্রেফতার হয়নি তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তাকে শিগ্গির গ্রেফতার করা হবে। হোগলবেড়িয়া থানার পুলিশের ভূমিকায় কোনও গাফিলতি ধরা পড়লে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় হোগলবেড়িয়ার ওই মূক ও বধির তরুণী বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। অভিযোগ, পড়শি গাজু শেখ তাঁকে জোর করে পাশের পাটখেতে নিয়ে যায়। সেখানেই সে তাঁকে ধর্ষণ করে। তরুণীর গোঙানির আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন এক প্রতিবেশী। টর্চের আলোতে তিনি গাজুকে চিনতেও পারেন। ওই প্রতিবেশীকে আসতে দেখেই চম্পট দেয় গাজু।
ওই রাতেই হোগলবেড়িয়া থানায় অভিযোগ জানান ওই তরুণীর মা। পুলিশ ওই তরুণীর পোশাক উদ্ধারের পাশাপাশি মেডিক্যাল পরীক্ষা করায়। পরের দিন থেকে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পরায় ফের তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দু’দিন পরে তিনি বাড়ি ফেরেন। ওই তরুণীর ভাই বলেন, “ঘটনার পর থেকে দিদি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গাজু তার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এলাকাতেও তাকে অনেকে দেখেছে। অথচ পুলিশ নাকি তাকে খুঁজেই পাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই এসডিপিও-র কাছে গিয়েছিলাম।”
ওই তরুণীর মা বলছেন, ‘‘মেয়েটি জন্মের পর থেকেই কানেও শোনে না, কথাও বলতে পারে না। অভাবের সংসারে ওর বিয়েও দিতে পারিনি। বাড়িতেই আমাকে কাজকর্মে সাহায্য করে। পাড়ার সকলেই ওকে খুব ভালবাসে। অথচ গাজু আমার এমন অসহায় মেয়ের এমন সর্বনাশ করবে তা ভাবতেও পারিনি। আমরা ওর কঠিন শাস্তি চাই।’’