প্রতীকী চিত্র
রাতারাতি জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য সংবাদ শিরোনামে মুর্শিদাবাদ। কাঁটাতার ঘেরা সীমানা এলাকা ডোমকল, জলঙ্গি, রানিনগর প্রভৃতি ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামের ছ’জনকে সন্দেহজনক আলকায়দা জঙ্গি হিসাবে গ্রেফতার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রায় চুপিসারে শনিবার ভোর রাতে দিল্লির গোয়েন্দাদের একটি দল তাদের গ্রাম থেকে গ্রেফতার করার পর থেকে জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তা নিয়ে জনমানসে নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠলেও জেলা পুলিশের কোন বাড়তি সতর্কতা নজরে পড়েনি রবিবার। জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে লালগোলা, বেলডাঙা, শমসেরগঞ্জের অতীত ইতিহাস থাকলেও ওই সমস্ত থানা এলাকাতেও এদিন ছিল না বিশেষ নজরদারি। স্বাভাবিক নিরাপত্তা বজায় ছিল জেলা হাসপাতাল চত্বরেও। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সুপার শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কোনরকম নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন বাড়তি উদ্যোগের নির্দেশ না আসায় স্বাভাবিক নিরাপত্তাই আছে হাসপাতালে।’’
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন সেখানেই। তাঁরা বলছেন, যদি জঙ্গিদের কোনও জাল মুর্শিদাবাদে ছড়ানো থাকে, তা হলে কেবল যে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বাইরেও তো কেউ থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে এনআই-র এই ধরপাকড়ের পরে তারা পালাতেও চাইবে। সেক্ষেত্রেই ভয় বাড়ছে। কেননা, এখন ট্রেন বন্ধ। কাউকে পালাতে গেলে বাস বা ছোট গাড়ি করে সড়ক পথ ধরেই যেতে হবে। সড়ক পথে কিন্তু একেবারেই কোনও বাড়তি নিরাপত্তার নজির দেখা যায়নি।
অন্য দিনের মতো জেলায় রবিবার সকাল থেকেই যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ছিল না কোনও প্রশাসনিক সতর্কতা, ছিল না পুলিশের তল্লাশিও। এমনকি দূরপাল্লার বাস যা সন্ধ্যায় বা রাতে বহরমপুর মোহনা বাসস্ট্যান্ড থেকে কলকাতা, শিলিগুড়ির উদ্দেশে ছাড়ে সেখানেও ছিল না নজরদারি। যা দেখে হতাশ সাধারণ মানুষ। রবিবার বহরমপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার বাসে উঠতে উঠতে অঙ্কিতা তরফদার বলেন, ‘‘আমাদের মনে যে ভয় ঢুকেছে তা বাসে পুলিশি তল্লাশি চললে কিছুটা কমত। কে যে কী ছদ্মবেশে আছে, তা তো বুঝতে পারি না। তাই শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’’ বহরমপুর জলঙ্গি রুটে নিত্য যাতায়াত শেখ হাবিবের। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় বেশ কয়েকবার সন্ত্রাসবাদীদের খোঁজ মিললেও কোনও দিনই পুলিশ নজরদারি চালায়নি। তাতেই ভয় বাড়ে।’’ আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘নিরাপত্তার আলাদা কোন পরিবর্তন হয়নি। তেমন নির্দেশও আসেনি।’’ যদিও জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘শনিবার রাত থেকে নাকা চেকিং হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি চলছে। আগের তুলনায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’ বিএসএফের ডিআইজি (মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ) কুণাল মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিনিয়ত যে রকম নিরাপত্তা বেষ্টণী থাকে তার কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’