হাঁসখালি

কে ছুড়ল অ্যাসিড, হাতড়াচ্ছে পুলিশ

আরও একটা দিন চলে গেল। পুলিশ দিনভর বলে গেল— ‘তদন্ত চলছে’। কিন্তু হাঁসখালির অ্যাসিড হামলায় এক জনও ধরা পড়ল না। অ্যাসিড আক্রান্ত ছাত্রী ও তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে শুক্রবার ফের কলকাতায় এনআরএসে যান তদন্তকারী অফিসারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩৬
Share:

আরও একটা দিন চলে গেল। পুলিশ দিনভর বলে গেল— ‘তদন্ত চলছে’। কিন্তু হাঁসখালির অ্যাসিড হামলায় এক জনও ধরা পড়ল না।

Advertisement

অ্যাসিড আক্রান্ত ছাত্রী ও তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে শুক্রবার ফের কলকাতায় এনআরএসে যান তদন্তকারী অফিসারেরা। তাঁদের দাবি, এমন কোনও তথ্য মেলেনি, যার সূত্র ধরে মামলার কিনারা করা যায়। উল্টে বৃহস্পতিবার যাদের জেরা করার জন্য ধরে আনা হয়েছিল, ২৪ ঘণ্টা গড়িয়ে যাওয়ায় তাঁদের ছেড়ে দিতে হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাতের ওই হামলায় মেয়েটির মুখ অনেকটা পুড়ে গেলেও চোখ বেঁচে গিয়েছে। তার মায়ের চোখও অক্ষত। তাঁকে ইতিমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি হাসপাতালে মেয়ের সঙ্গেই রয়েছেন। বুধবার পুলিশ এনআরএসে গেলে ছাত্রীটি এক যুবকের নাম বলেছিল। এ দিন একই নামের তিন যুবকের ছবি তাকে দেখান তদন্তকারী অফিসারেরা। কিন্তু এদের কাউকে সে চেনে না বলে মেয়েটি জানিয়েছে।

সোমবার গভীর রাতে হাঁসখালির গাজনা দক্ষিণপাড়ায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটির বিছানা তাক করে অ্যাসিড ছোড়া হয়েছিল। মেয়ের পাশেই শুয়ে ছিলেন মা। এর পরে সপ্তাহ ঘুরতে চলল। কে অ্যাসিড ছুড়ল, কোথা থেকে অ্যাসিড এল— পুলিশের কাছে কোনও সদুত্তর নেই। মেয়েটির সঙ্গে কথা বলার পরে তারা গাজনা হাইস্কুলের সামনে একটি মোবাইলের দোকানের মালিক এবং তাঁর বন্ধুকে জেরা করা জন্য আটক করেছিল। ওই দোকানেই মালিকের বিবাহিত বন্ধুর সঙ্গে মেয়েটির আলাপ হয়েছিল বলে জেনেছিল পুলিশ। তিনি নানা সময়ে মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতেন, এমনকী হুমকিও দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন মেয়েটির দাদা।

Advertisement

কিন্তু এ দিন ছাত্রীটি তদন্তকারী অফিসারদের জানায়, ওই যুবকের সঙ্গে কোনও দোকানে তার আলাপ হয়নি। হয়েছিল মোবাইলের মিসড কল থেকে। এক সন্ধ্যায় ওই যুবকটি তাদের বাড়িতে এসে জলও খায়। কিন্তু পুলিশের দেখানো তিনটি ছবির একটিও সে চিনতে পারছে না বলে জানিয়েছে। তার মা-ও জানান, ওই মুখগুলো তিনি চেনেন না।

একটা ব্যাপারে পুলিশ নিঃসন্দেহ। তা হল, ব্যক্তিগত আক্রোশের জায়গা থেকেই এই অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। রহস্যের জট ছাড়াতে ছাত্রীটির এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীকে এর আগে জেরা করা হয়েছিল। এ দিনও ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এ দিন একটি ছেলের নাম পাওয়া গিয়েছে, যার মেয়েটির উপরে আক্রোশ ছিল। আরও দু’এক জন সন্দেহভাজনের তালিকায় আছে।

হামলাকারী কোথা থেকে অ্যাসিড পেল, তা খুঁজে বের করতে পারলেও রহস্যের জট কিছুটা খুলতে পারত। এর আগে বেশির ভাগ হামলার ক্ষেত্রে স্থানীয় সোনার দোকান থেকে অ্যাসিড নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ দিন পর্যন্ত হাঁসখালির কোনও সোনার দোকানে খোঁজখবর করেনি পুলিশ। কেন? পুলিশের দাবি, এত সোনার দোকান আছে, যে সেখান থেকে সূত্র পাওয়া কঠিন। বরং অন্য সূত্র ধরেই অপরাধীকে ধরা সহজ হবে।

যদিও সেই ‘সহজ’ কাজটাই গত চার দিনে করে ওঠা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement