কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে হামলা।
কলেজের দখল কাদের হাতে থাকবে তা নিয়ে লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্য জুড়ে একাধিক কলেজে টিএমসিপি ও এবিভিপির মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই মধ্যে জেলার একাধিক কলেজের দখল নিয়েছে এবিভিপি। তারা কলেজে বিজেপির পতাকাও ঝুলিয়েছে। সোমবার এই আধিপত্য কায়েমের লড়াইয়ে তুলকালাম অবস্থা হয় কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ, নবদ্বীপের বিদ্যাসাগর কলেজ ও আসানগরের মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজে। মারামারি, ভাঙচুরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এই ঘটনায় বিদ্যাসাগর কলেজের টিএমসিপির ৪ জন কর্মী গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অপেক্ষাকৃত কম আহত দু’পক্ষের বেশ কয়েক জন। গত শনিবার রাতে আবার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের ছাত্র সংসদের ঘরের তালা ভেঙে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও ছিঁড়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় টিএমসিপির পক্ষ থেকে এবিভিপি-কে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবিভিপি।
বিদ্যাসাগর কলেজে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই দফায়-দফায় গোলমাল চলছিল। কলেজের ভিতরে চাপা উত্তেজনা তৈরি হতে থাকে। সোমবার তা চরম আকার নেয়। টিএমসিপির অভিযোগ, তাদের ছেলেদের কলেজের বাইরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে এবিভিপি-র ছেলেরা। ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে প্রায় আধঘণ্টা নবদ্বীপের পোড়ামা তলায় অবস্থান বিক্ষোভ করে টিএমসিপি। যদিও এবিভিপির দাবি, টিএমসিপির ছেলেরা কলেজের ভিতরে বসে মদ খাচ্ছিল। তারা প্রতিবাদ করায় তাদের উপরেই চড়াও হয় টিএমসিপি।
আবার আসাননগর কলেজে দীর্ঘ দিন ধরেই দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে বিবাদ চলছে। এবিভিপির ছেলেরা কলেজ দখল করেছিল। সোমবার কলেজের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার শেষে কলেজের বাইরে রাস্তায় টিএমসিপির ছেলেদের ধরে এবিভিপির ছেলেরা হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। তার পরই দুই পক্ষের মারপিট শুরু হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
এ দিকে সোমবার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে সোমবার টিএমসিপির ছেলেরা গিয়ে দেখে, ছাত্র সংসদের ঘরের তালা ভাঙা। ভিতরে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে কলেজে উত্তেজনা ছড়ায়। এখানেও টিএসিপির দাবি, এবিভিপির লোকজন রাতের অন্ধকারে কলেজে ঢুকে এমন করেছে। যগিও এই অভিযোগ আস্বীকার করেছে এবিভিপি। তাদের পাল্টা দাবি, এটা আসলে টিএসসিপির গোষ্ঠী কোন্দলের ফল। যার দায় তাঁদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।
টিএমসিপির নদিয়া জেলা কমিটির সহ সভাপতি সম্রাট পাল বলছেন, “বহিরাগতদের নিয়ে এসে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে এবিভিপি। তারা বুঝতে পারছে না যে, সাধারণ পড়ুয়ারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে এর জবাব দিয়ে দেবে।” আর এবিভিপির জেলা প্রধান আশিস বিশ্বাস বলছেন, “টিএমসিপি কলেজে কলেজে আসামাজিক কাজকর্ম করে আসছে। এখন আমাদের ছেলেরা তার প্রতিবাদ করাতে ওরা ক্ষেপে গিয়ে আমাদের উপর চড়াও হচ্ছে।”