—প্রতীকী ছবি।
আবারও মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। বুধবার সকালে বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় অন্তরা চট্টোপাধ্যায় নামের এক গৃহবধূর। বছর তেতাল্লিশের ওই মহিলা গত কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। গত ৩ অক্টোবরই উনি বাড়ি ফিরেছিলেন কলকাতা থেকে। তার পরেই ৪ অক্টোবর থেকে প্রচন্ড জ্বর আসে তাঁর। প্রাথমিক ভাবে বাড়িতেই চিকিৎসা চলতে থাকে। কিন্তু ক্রমশ অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। থাকায় গত সোমবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে তাঁর।
মৃতার স্বামী সাগর চট্টোপাধ্যায় জানান, কলকাতা থেকে আসার পর থেকেই অসুস্থবোধ করছিলেন অন্তরা। ৪ অক্টোবর থেকে ধুম জ্বর আসে তাঁর। প্রথমে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। গত রবিবার পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হওয়ায় সোমবার বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অন্তরাকে। বুধবার সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে যে, তাঁর দুই শিশুসন্তান রয়েছে। এক জন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। অন্য জন পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। ওই দুই শিশুর ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন মৃতার স্বামী। ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রশাসনের ‘গড়িমসি’র দিকেই আঙুল তুলেছে মৃতার পরিবার। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, “জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। ডেঙ্গি যাতে আর না ছড়ায়, তার জন্য মুর্শিদাবাদ স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” উল্লেখ্য যে, এর আগেও মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
চলতি মরসুমে রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতি দিন বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। মারাও যাচ্ছেন অনেকে। সরকারের তরফে কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হচ্ছে না। উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা, নদিয়ায় ডেঙ্গি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। জেলায় বেশ কিছু এলাকাকে ডেঙ্গি হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করে শুরু হয়েছে মশাদমনের কাজ। প্রশাসনের তরফে ড্রোনের মাধ্যমে মশা মারার ওষুধ ছড়ানো হচ্ছে দমদমের একাধিক ওয়ার্ডে। মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। চলছে সচেতনতামূলক প্রচারও। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে নবান্নে বৈঠক হয়ে গিয়েছে। জেলাশাসক, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ডেঙ্গি রোধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বৃষ্টি কমে যাওয়ায় ডেঙ্গির প্রকোপ কিছুটা কমবে বলে আশাবাদী তাঁরা।