—প্রতীকী চিত্র।
কৃষ্ণনগর শহরে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। যা নিয়ে শহরের নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে পরস্পরের বিরুদ্ধে দায় চাপানোর খেলা। এরই মধ্যে সামনে এসেছে দলের শহর সভাপতির পদ থেকে প্রদীপ দত্তের ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি। প্রদীপের দাবি, ভোটে ভরাডুবির দায় নিয়েই তিনি পদত্যাগ করেছেন। যদিও অনেকের ধারণা, দলেরই একাংশের সমালোচনায় অভিমানী হয়ে তিনি জেলা সভানেত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর শহরে তৃণমূলের বিপর্যয় নতুন কিছু নয়। সেই ১৯৯৮ সাল থেকেই এই শহরে একটানা ‘লিড’ পেয়ে আসছে বিজেপি। এ বারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে থেকেছে তৃণমূল। গত বারেও প্রায় একই ভোটে তারা পিছিয়ে ছিল। এবার কার্যত পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেও তারা পরিস্থিতি পাল্টাতে পারেনি।
ফল বেরনোর পরেই কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী তথা সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী মহুয়া মৈত্রের ঘনিষ্ঠ অনেকে পুরপ্রতিনিধিদের একাংশের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছেন। আবার বিরোধী গোষ্ঠীর অনেকে শহর নেতৃত্বের উপরে ব্যার্থতার দায় চাপিয়ে দাবি করেছেন, সবাইকে দায়িত্ব দিয়ে ভোটের কাজ করানো হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন, অন্তর্ঘাতই যদি হয়ে থাকে তবে মহুয়া-ঘনিষ্ঠ পুরপ্রতিনিধিধের এলাকায় ভরাডুবি হবে কেন? মহুয়া অনুগামী এক পুরপ্রতিনিধির দাবি, “এ বার কিন্তু পরিস্থিতি অনেকটাই আমাদের দিকে ছিল। কিন্তু প্রার্থীর ঘনিষ্টদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই ডুবিয়েছে।”
এ বার প্রদীপ দত্ত ওরফে মলয় শহর সভাপতির ইস্তফার বিষয়টি সামনে আসতেই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এই সিন্ধান্ত কি তিনি স্বেচ্ছায় নিয়েছেন নাকি তাঁকে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রদীপ অবশ্য বলছেন,“এটা একান্তই আমার সিদ্ধান্ত। শহরে দলের ফল খুবই খারাপ হয়েছে। এর পর আর সভাপতি পদ আঁকড়ে থাকার নৈতিক অধিকার থাকে না।” তাঁর সংযোজন, “শহরে আরও অনেক যোগ্য নেতা আছেন। দল তাঁদের কাউকে দায়িত্ব দিয়ে সংগঠনকে মজবুত করুক।”