রাস্তায় চেয়ার পেতে বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
জেলার দু’ জায়গায় বাসকর্মীদের মারধরের অভিযোগে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হল বহরমপুরে।
বহরমপুর মোহনা বাসস্ট্যান্ড থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত বাসের আসনের টিকিট চাইলে দেওয়া হয় না। যার জেরে ওই দূরত্ব যাত্রীদের কার্যত দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে হয় বলে অভিযোগ। শনিবার সন্ধ্যায় ইসলামপুর কলেজ মোড়ে একটি যাত্রিবাহী বাস দাঁড় করিয়ে সেই বাসের সহকারী (হেল্পার) ও কন্ডাক্টরকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। ডোমকলের গড়াইমারি রুটে হাড়ুরপাড়া ঘোষপাড়ায় দুর্ঘটনার জেরে এক বাস চালককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে। সেই দু’টি ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার আধ ঘণ্টার প্রতীকী বাস ধর্মঘট করেন বাস শ্রমিকদের সংগঠন ‘মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সদস্যরা। আন্দোলনের জেরে সেখানে কিছু ক্ষণ বাস চলাচল বন্ধ ছিল। এর জেরে মোহনা বাস টার্মিনাসের কাছে যানজট হয়। যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।
তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী কালে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাস সংগঠনের কর্মকর্তারা। ‘মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে’র সম্পাদক আনিসুল আম্বিয়া বলেন, ‘‘ইসলামপুর পর্যন্ত বাসের আসন যাত্রীদের দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও মিথ্যা অভিযোগ তুলে দু’জন কর্মীকে শনিবার সন্ধ্যায় ইসলামপুর কলেজ মোড়ে জনা পনেরো দুষ্কৃতী মারধর করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও ব্যবস্থা নেয়নি। ডোমকলেও টোটোর সঙ্গে বাসের ধাক্কা লেগে একজন সামান্য আহত হন। পরে বাস চালককে বাড়ি থেকে তুলে এনে মারধর করে। তিনি গুরুতর আহত হয়ে হসাপতালে ভর্তি। পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক, নইলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’ যদিও জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, ইসলামপুরে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। বাস আটকে থাকার জেরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বাসের আসন দেওয়া নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য বাস মালিকদের ইসলামপুর থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। ডোমকলের ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। আম্বিয়া জানান, ইসলামপুরের কলেজ মোড়ে বাস পৌঁছতেই দু’জন যাত্রীকে দিয়ে বাস দাঁড় করানো হয়। এরপর জনা পনেরো দুষ্কৃতী বাসের সহকারীকে মারেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মার খান কন্ডাক্টর। তবে বহরমপুর থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত বাসের যাত্রীদের আসন না দেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। এ নিয়ে বাস মালিক, শ্রমিকপক্ষকে নিয়ে গত ২৫ জুলাই ইসলামপুর থানায় বৈঠক করে পুলিশ। জেলার বাস মালিক সংগঠনের মুখপাত্র শান্তনু সাহা বলেন, ‘‘বাস একপ্রকার ফাঁকাই যায়। ফলে ইসলামপুর পর্যন্ত আসনের টিকিট দেব না, এটা হয় না। আমরা আসন দেওয়ার জন্য ডেকে বাসে তুলি। কোনও দিন ভিড়ের জেরে দু’-একটি এমন ঘটনা ঘটতে পারে। সেই উদাহরণ টেনে বাসকর্মীদের উপর হামলা হয়েছে।’’