—প্রতীকী চিত্র।
মহিলার বস্তাবন্দি লাশ ফেলতে এসে যে এলাকার লোকের হাতে ধরা পড়েছিল, মৃতার সেই ‘প্রেমিক’ কার্তিক দেবনাথকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সন্দীপা সরকার। বুধবার কার্তিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ নিজেই খুনের মামলা রুজু করে। বৃহস্পতিবার কল্যাণী আদালতে হাজির করা হলে ধৃতকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ কার্তিক মোটরবাইকে বস্তাবন্দি সন্দীপার লাশ এনে হরিণঘাটা ফার্মে জঙ্গল রোড এলাকায় ঝোপে ফেলতে যাচ্ছিল। স্থানীয়রা দুর্গন্ধ পেয়ে তাকে আটকে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তল্লাশি চালাতেই বস্তা থেকে কম্বলে মোড়া লাশ বেরিয়ে পড়ে। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, “ধৃত খুনের কথা স্বীকার করেছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপা ও কার্তিকের বাড়ি নবদ্বীপে। সন্দীপা বিবাহিত। দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অন্য জনের বয়স বছর কুড়ি। ছেলেও রয়েছে বছর পনেরোর। কার্তিকও বিবাহিত। হরিণঘাটাতেই শ্বশুরবাড়ি। বছর পাঁচেক আগে একটি দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী মারা যায়। ১২ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে তার। নবদ্বীপে থাকাকালীনই, বছর ছয়-সাত আগে দু’জনের মধ্যে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ছ’মাস তারা বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া থাকছিল। গত মাস তিনেক ধরে হরিণঘাটা পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে শুভেন্দুনগরে ছিল। কার্তিক জাগুলির একটি রেস্তরাঁয় কাজ নেয়। ওই রেস্তরাঁর পাশেই সে সন্দীপাকে একটি ঘুগনির দোকান করে দিয়েছিল। রেস্তরাঁর লোকজন তাদের স্বামী-স্ত্রী বলেই জানত। পুলিশ তাদের ভাড়া বাড়ির প্রতিবেশীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জেনেছে, গত কয়েক দিন ধরে তাঁরা সন্দীপাকে দেখছিলেন না।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ইদানীং সন্দীপা আর ঘুগনির দোকান চালাতে চাইছিলেন না। তা নিয়েই দিন দুয়েক আগে দু’জনের মধ্যে অশান্তি বাধে। পুলিশের দাবি, কথা কাটাকাটি হতে হতে কার্তিক সন্দীপাকে শ্বাসরোধ করে মারে। দু’দিন বাড়িতেই ছিল লাশ। বিজয়া দশমীর পরের দিন সকালে সেটিকে বস্তায় পুরে ফেলতে যায় কার্তিক। ধরা পড়ার পরে সে গল্প ফাঁদে, এক দোকানে সে কাজ করে। সেখান থেকে দু’হাজার টাকা দিয়ে কুকুর-গরুর মৃতদেহ ফেলতে দিয়েছে। সেগুলোই সে ফেলতে এসেছে। কিন্তু বস্তা খুলতেই সন্দীপার পচন ধরা মৃতদেহ বেরিয়ে পড়ে।