বুড়োরাজ মন্দির থেকে ফেরার পথে বাস উল্টে জখম হলেন প্রায় ৫০ জন। সোমবার রাতে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ধরমপুর এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহতেরা নদিয়ার কৃষ্ণনগর এলাকার বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে পূর্বস্থলী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। পরে প্রায় ২৫ জনকে নদিয়ার প্রতাপনগর এবং শক্তিনগর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাহাদুরপুর গ্রামে এক শিশুর মুখে প্রসাদ দেওয়ার অনুষ্ঠান ছিল এ দিন। সেই উপলক্ষে ঘোষ পরিবারের তরফে প্রায় একশো জনকে বাসে চাপিয়ে আনা হয় জামালপুর বুড়োরাজ মন্দিরে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে বাসে আসে বাজনদারদের একটি দল। খাওয়া দাওয়া পর্ব মেটার পরে বাসটি বাহাদুরপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিলোমিটার পাঁচেক যাওয়ার পরে ধরমপুর এলাকায় এসটিটিকেকে রোডের একটি খালে চাকা পড়ে যায় বাসটির। এর পরেই চালক গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারান। রাস্তার মধ্যে উল্টে যায় বাসটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘটনার সময় বাসের ছাদেও ছিলেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের অনেকেই প্রাণ ভয়ে বাস থেকে লাফ দেন। পরে বাসের যাত্রীদের চিৎকার শুনে স্থানীয় মানুষজন এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেন।
দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন পূর্বস্থলীর আইসি রাকেশ মিশ্র। পূর্বস্থলী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আহতদের পাশে দাঁড়ান পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। রাতে আহতদের অন্য হাসপাতালে পাঠাতে সমস্যা হলে তপনবাবু নিজের গাড়িতেই নদিয়ার হাসপাতালে পাঠান কয়েকজনকে। জানা গিয়েছে, আহতদের বেশির ভাগের পা এবং মাথায় আঘাত লেগেছে। রাতে বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা অজয় ঘোষ বলেন, ‘‘ভাইপোর মুখে প্রসাদ দেওয়ার অনুষ্ঠান ছিল। এর জন্যই গ্রামের বাসিন্দাদের নিমন্ত্রণ করে মন্দিরে আনা হয়েছিল।’’
রাতে একে-একে আহতদের আনা হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। বাসে অনেক যাত্রীই ছিলেন, সকলে কমবেশি আহত হন। বাহাদুরপুরের বাসিন্দা টুকুন ঘোষ, তাপসী ঘোষেরা বলেন, ‘‘হঠাৎ একটা নিচু জায়গায় বাসটা নেমে যেতে থাকল। এরপর উল্টে গেল। আমরা ভিতরে আটকে পড়লাম। কারও পায়ে, কারও মাথায় চোট লেগেছে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে পিছনের দিকের জানালা ভেঙে আমাদের উদ্ধার করে।’’ নিজস্ব চিত্র