চাকদহে জাল আধার কার্ড কাণ্ডে ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র
ভুয়ো আধার কার্ড চক্র ধরতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় শনিবার অভিযান চালাল পুলিশ ও প্রশাসন। এ দিন দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নেউলিয়া আশ্রমপাড়ায় এক মহিলা-সহ চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম দেবী ঘোষ, সজন পোদ্দার, বিলাস বিশ্বাস এবং বাপি বালা। মুরুটিয়া থানার রশিদপুর বাসস্ট্যান্ডেও একটি ভুয়ো আধার কার্ড সংশোধনী কেন্দ্রে হানা দিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে নেউলিয়া আশ্রমপাড়া এলাকার এক বাসিন্দার বাড়িতে ধৃতেরা আধার কার্ড তৈরি করছিল। সেখান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিনই তাদের কল্যাণী আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই বাড়ি থেকে পুলিশ একটি ল্যাপটপ এবং কিছু আধার কার্ড-সহ বিভিন্ন জিনিস আটক করেছে।
ওই বাড়িটিতে বেশ কিছু দিন ধরে বেআইনি ভাবে আধার কার্ড তৈরি করা হচ্ছে বলে জানতে পারে পুলিশ। খোঁজখবর শুরু করে পুলিশ এও জানতে পারে, একটি চক্র এ সব করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার কিছু গরিব মানুষ আধার কার্ড করতে চাইছিল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করে দিচ্ছিল। ৬০-৭০ টি কার্ড তৈরি করা হচ্ছিল এক দিনে। প্রত্যেকের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছিল বেশ কয়েক হাজার টাকা। গাংনাপুর থানার রায়পুরের এক বাসিন্দা বলেন, “নেউলিয়া আশ্রমপাড়ায় আধার কার্ড করা হচ্ছে বলে জানতে পারি। সেখানে গিয়ে ওদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। সেই সময় পুলিশ এসে ওদের ধরে নিয়ে যায়।”
অন্য দিকে, মুরুটিয়া থানার রশিদপুর বাসস্ট্যান্ডে একটি ভুয়ো আধার কার্ড সংশোধনী কেন্দ্রে শনিবার সকালে হানা দেয় তেহট্ট মহকুমা প্রশাসন। তেহট্টের মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্তের নেতৃত্বাধীন ওই দলে ছিলেন করিমপুর-২ ব্লকের বিডিও সত্যজিৎ কুমার-সহ বেশ কয়েকজন। ওই ভুয়ো কেন্দ্র থেকে মহকুমা শাসক একটি ল্যাপটপ, একটি ফিঙ্গার স্ক্যানার এবং একটি প্রিন্টার-সহ বেশ কিছু কাগজপত্র উদ্ধার করেছেন। ওই সেন্টারের মালিক পলাতক। মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সেন্টারের পক্ষ থেকে মাইকে ও হ্যান্ড বিল দিয়ে প্রচার করা হয়েছে যে, ওই সেন্টারে আধার কার্ড সংশোধন করা হয় এবং তৈরি করা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ জন্য মানুষের কাছ থেকে বেশ কয়েক হাজার টাকাও তুলেছে ওই সেন্টারের মালিক। এই খবর ব্লক প্রশাসনের কাছে যায়। বিষয়টি ব্লক প্রশাসন তেহট্টের মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্তকে জানালে এ দিন সকালে মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে একটি দল ওই সেন্টারে অভিযান চালায়। তাঁদের দেখে ওই সেন্টারের মালিক ও কর্মচারীরা পালিয়ে যায়। মহকুমা শাসক বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক ছাড়া কোথাও আধার কার্ড সংশোধন বা তৈরি
হচ্ছে না।’’