সাগদরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছেন কংগ্রেসের বাইরন। তার পরেই কি এই বদলি? প্রশ্ন বিরোধীদের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মুর্শিদাবাদের সাগদরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার-সহ ৪ আমলাকে বদলির নির্দেশ দিল নবান্ন। শুক্রবার সব মিলিয়ে মোট ৮০ জন বিসিএস অফিসারের বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর তার পরেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ছিলেন দিব্যেন্দু মজুমদার। তাঁকে পশ্চিম বর্ধমানের জেলা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি করে পাঠানো হয়েছে। এত দিন মুর্শিদাবাদ জেলার ডেপুটি ডিএল অ্যান্ড এলআরও পদে ছিলেন তিনি। একই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের ৩ বিডিওকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বদলির তালিকায় আছে সাগরদিঘির বিডিও সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। তাঁকে নদিয়ার কল্যাণীর পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওসডি করে পাঠানো হয়েছে। ওই জায়গায় দার্জিলিঙের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ডেপুটি কালেক্টরেট সঞ্জয় সিকদারকে আনা হয়েছে। রাজ্যের নির্দেশিকা অনুযায়ী দার্জিলিঙে বদলি করা হয়েছে রঘুনাথগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের বিডিও সৌরভ বসুকে।
এ ছাড়াও ডব্লিউবিসিএস অফিসার দেবোত্তম সরকারকে রঘুনাথগঞ্জ ২-এর বিডিও করা হয়েছে। দেবোত্তম এতদিন কার্শিয়াঙে কর্মরত ছিলেন। তাঁর জায়গায় শমসেরগঞ্জের বিডিও কৃষ্ণচন্দ্র মুন্ডাকে পাঠানো হয়েছে। শমসেরগঞ্জের বিডিও করে আনা হয়েছে সুজিতচন্দ্র লোধকে। তিনি হুগলি জেলায় কর্মরত ছিলেন।
শাসকদল একে প্রশাসনের রুটিন বদলি বলে দাবি করলেও বিরোধীরা অন্য অভিযোগ করছেন। সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস বলেন, ‘‘সরকারি প্রশাসনিক বদলির ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাই না। তবে ভোটের কারণে যদি বদলি হয়ে থাকে, তবে তো নিঃসন্দেহে খারাপ ব্যাপার।’’ মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘নির্বাচনে পরাজয়ের পর দলের নেতাদের বিভিন্ন পদ থেকে না সরিয়ে সরকারি আমলাদের বদলি করা হচ্ছে। এখানেই বোঝা যায় যে মুখ্যমন্ত্রী আসলে প্রশাসন দিয়ে দল চালান।’’
এ নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তাহেরপুরে (পুরভোট) হেরে গিয়ে ওসিকে ক্লোজ করেন। সাগরদিঘিতে হেরে গেলেন। ভোলা পান্ডেকে (আইপিএস অফিসার) ক্লোজ করলেন। আজ (শুক্রবার) ৮০ জন বিডিওর বদলির অর্ডার দেখবেন। তাতে এক নম্বরে রয়েছে সাগরদিঘির নাম। কারণ, ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে গিয়েছেন।’’ শুভেন্দুর সংযুক্তি, ‘‘আমি ওই বিডিওকে বলব বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে আপনাকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে কাজ দেব। মাথানত করবেন না।’’
গত ২ মার্চ সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশ হয়। তাতে ২৫ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন।