—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গ্রাম দখলের লড়াইয়ের জেরে সোমবার থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সুতি থানার হারুয়া গ্রাম। শতাধিক বোম পড়েছে, লাঠি, বাঁশ, তলোয়ার নিয়ে একে অপরকে তেড়ে গিয়েছে দুই পক্ষ। বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না নিরীহ গ্রামবাসীরা। পুলিশ অবশ্য শাসক দল বলে হাত গুটিয়ে থাকেনি। ইতিমধ্যেই দু’পক্ষের ২৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের টহলদারি চলছে।
হারুয়ার ওই পঞ্চায়েতে ২৬টি আসনের মধ্যে এ বারে ১২টিতে জিতে বিজেপির দুই সদস্যের সমর্থনে ক্ষমতা দখল করে কংগ্রেস ও বাম জোট। কিন্তু তার আগে গ্রামের সকলেই প্রায় ছিল তৃণমূলের।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের মনোনয়ন পাবেন না বুঝে তৃণমূল নেতা মসরেকুল শেখ সহ অনেকেই দল ছেড়ে কেউ কংগ্রেসের টিকিটে, কেউ সিপিএমের টিকিটে দাঁড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কটা শেখ সহ তাঁর অনুগতদের বিরুদ্ধে। জিতেও যান। সংরক্ষিত আসনে কংগ্রেসের জয়ী সদস্য রাখী রবিদাসকে প্রধান করে বোর্ড গঠন করে জোট।
কিছু দিন যেতে না যেতেই লোকসভা নির্বাচনের আগে মসরেকুল ও তাঁর দলবল সহ বেশির ভাগই খলিলুর রহমান ও জাকির হোসেনের উপস্থিতিতে যোগ দেন তৃণমূলে। সেই থেকেই তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী হারুয়াতে। লোকসভা নির্বাচনে সকলেই নেমে পড়েন তৃণমূলের প্রার্থী খলিলুরের হয়ে প্রচারে।
খলিলুর প্রায় হাজার পাঁচেক ভোটে লিড পান হারুয়া থেকে, দুই গোষ্ঠীই তাঁর হয়ে নেমেছিল। কিন্তু বাদ সাধে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল। আড়াই বছর না পেরোলে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যাবে না।
বর্তমানে পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় রয়েছে মসরেকুল সমর্থকেরা। সেই ক্ষমতা হাতে পেতে মরিয়া তৃণমূলের টিকিটে জেতা জনপ্রতিনিধিরা। আর তাই নিয়েই সোমবার থেকে গ্রামের মধ্যে নেমে পড়েছে দুই দলের লোকজনই।
গ্রামেই বাড়ি কংগ্রেসের সুতি ১ ব্লক সভাপতি মহম্মদ তারিকুল আলমের। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতের আগে মসরেকুল সহ অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে কেউ কংগ্রেসের, কেউ বামের প্রার্থী হন। তাঁরা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কটা শেখকে হারাতে আমাদের সাহায্য চান। আমরা তাঁদের দলের টিকিট দিই এবং জয়ী হই। তারপরে ফের তাঁরা জাকির ও খলিলুরের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। এখন সেই পঞ্চায়েত দখলেরই লড়াই চলছে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। পুলিশ অবশ্য কড়া পদক্ষেপ করেছে।”
সুতি ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ওই অঞ্চলে কটা শেখের নেতৃত্বেই চলছে তৃণমূল। সেখানে আইন শৃঙ্খলা ভেঙে যারা অশান্তি করবে পুলিশ তাদের ধরবে। দল তাদের পক্ষে নেই।”
তৃণমূল সাংসদ ও জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘আমি দিল্লিতে রয়েছি। কোথাও অশান্তি হলে পুলিশ পদক্ষেপ করুক এটাই চাই।”