বহরমপুরের নতুন বাজারে চোর সন্দেহে গণপ্রহার। নিজস্ব চিত্র
নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার ট্রাডিশন রয়েই গেল!
রবিবার, বহরমপুরে দু’টি এলাকায় ছিনতাইয়ের এবং টম্যাটো চুরির অভিযোগে দুই যুবককে লাইটপোস্টে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। তবে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে জনতার শাসনে ওই দুই যুবকই গুরুতর জখম হয়েছে।
এ দিন সকালে, ভিড়ে গমগম বহরমপুরের নতুন বাজার চত্বরে পাইকারি বাজারে এক ব্যাগ টোম্যাটো নিয়ে পালাচ্ছিল এক যুবক। অভিযোগ, ভিড়ের মাঝে গা ঢাকা দেওয়ার আগেই তাকে ধরে ফেলে স্থানীয়েরা। তার পর শুরু হয় ‘সাস্তি’র পালা। রাস্তার পাশেই লোহার রেলিংয়ে বেঁধে চলে গণপ্রহার। জনতার কিল-ঘুঁষি-চড়ে গুরুতর জখম হয় সে। পরে খাগড়া ফাঁড়ির পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এমন চুরির ঘটনা প্রায়ই ঘটে ওই বাজারে। এক ব্যবসায়ি বলেন, ‘‘ফাঁকা ক্যরেটের দামই হাজার-বারোশো টাকা। চুরি করেছিল বলেই তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু সে দায় তো পুলিশের? সদুত্তোর মেলেনি।
বিকেলে চুঁয়াপুর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন একটি পেট্রল পাম্পের কাছে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টোটোয় চেপে এক মহিলা বহরমপুরের দিকে যাচ্ছিলেন সেই সময় একই দিকে বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় দু’জন ব্যক্তি ওই মহিলার গলার হার টেনে ছিঁড়ে নিয়ে পালানোর সময় রাস্তায় বাইক-সহ উল্টে যায়। আশপাশের মানুষজন ছুটে এসে এক জনকে ধরে ফেলে শুরু করে পিটুনি। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
বহরমপুরে জনতার অনুসাসনের ঘটনা নতুন নয়। জেলা পুলিশের এক প্রাক্তন কর্তা বলেন, ‘‘বছর কয়েক আগে গণপিটুনি প্রায় নিত্য ঘটনায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। সাইকেল-চোর সন্দেহে পর পর অন্তত কুড়ি-বাইশটি পিটুনির ঘটনা ঘটে এক মাসের মধ্যে।’’ মুর্শিদাবাদের এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশের উপর আস্থা হারানো উচিত নয়, আইন নিজের হাতে না-নেওয়াই ভাল।’’