প্রতীকী ছবি।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের ‘রেকমেন্ডেশন লেটার’ আছে দু’জনের কাছেই! কাকে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এবং তার জেরে কৃষ্ণনগর হাই স্কুলের কর্মশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে আছে।
গোটা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়ে কী কর্তব্য জানতে চেয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এখনও কোনও জবাব আসেনি।
সম্প্রতি কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা কবিতা বিশ্বাস নামে এক শিক্ষিকা জেলার স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত ভাবে জানান, তাঁর কাছে স্কুল সর্ভিস কমিশনের ‘রেকমেন্ডেশন লেটার’ ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ‘অ্যাপয়েনমেন্ট লেটার’ থাকা সত্ত্বেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁকে স্কুলে যোগ দিতে দিচ্ছেন না। তার কথায়, “আমার কাছে প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র আছে। তার পরও কেন যোগ দিতে দিচ্ছেন না সেটা আমি বুঝতে পারছি না। আমকে অহেতুক হয়রান করা হচ্ছে।” তিনি বলেন, “আমি ওই স্কুলে যোগ দিতে না পারলে অসম্ভব ক্ষতি হয়ে যাবে।”
২০১০ সালে বীরভূমের নলহাটি-২ ব্লকের প্রসাদপুর রামরঞ্জন হাইস্কুলে তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে কর্মশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন। এর পর কিডনিতে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে তাঁর দাবি। দীর্ঘ দিন নানা জায়গায় ছোটাছুটি করার পর শেষ পর্যন্ত ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ গ্রাউন্ড’-এ তাঁকে কৃষ্ণনগর হাইস্কুলে বদলি করা হয়। তিনি নলহাটি স্কুলের ‘রিলিজ অর্ডার’ নিয়ে কৃষ্ণনগর হাইস্কুলে আসেন যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু এখানে এসে কার্যত অথৈ জলে পরে যান। কারণ,স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, তিনি ওই পদে যোগ দিতে পারবেন না। কারণ, আগেই আরও এক জন শিক্ষককে ওই একই পদে ‘রেকমেন্ড’ করে পাঠিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে পুরুলিয়ার বাসিন্দা শুভেন্দু সোরেন নামে এক জনকে ওই একই পদের জন্য ‘রেকমেন্ড’ করে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু মধ্য শিক্ষা পর্ষদ থেকে ‘অ্যাপয়েনমেন্ট লেটার’ পাওয়ার আগে আদালতে মামলা শুরু হয়। ফলে তাঁর নিয়োগ আটকে যায়। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কবিতাদেবী বলছেন, “আমার কাছে তো অ্যাপয়েনমেন্ট লেটার আছে। ওর কাছে তো সেটা নেই। তা হলে কেন আমাকে যোগ দিতে দেওয়া হবে না?”
প্রধান শিক্ষক উৎপল ভট্টাচার্য বলছেন, “মামলার রায় তো এখনও বের হয়নি। আমাকে দফতর থেকে বলাও হয়নি যে, আগের ব্যক্তির নিয়োগ বাতিল হয়ে গিয়েছে। তা হলে কী করে ওই শিক্ষিকাকে যোগ দিতে দেব?” তিনি বলেন, “ডিআই এর কাছে চিঠি দিয়ে আমাদের কী করণীয় জানতে চেয়েছি। তাঁর নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছি।” জেলার মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক খগেন্দ্রনাথ রায় বলছেন, “সম্ভবত কোনও ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমনটা হয়েছে। আমরা এসএসসি ও পর্ষদের কাছে জানতে চেয়েছি এ ক্ষেত্রে কি করণীয়। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”