—প্রতীকী চিত্র।
নাকা তল্লাশি চলাকালীন একটি চারচাকার গাড়ি থেকে হাজার হাজার টাকা, একগুচ্ছ সিমকার্ড ও মোবাইল উদ্ধার হতেই সন্দেহ হয়েছিল পুলিশকর্মীদের। এর পরেই জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয় গাড়ির যাত্রীদের। শুরুতে সব প্রশ্নের সপাট জবাব দিলেও, চাপের মুখে ধীরে ধীরে সব উগরে দিয়েছিলেন তাঁরা! গাড়ির পাঁচ যাত্রীর স্বীকারোক্তিতেই এটিএম জালিয়াতি চক্রের হদিস পেয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে গ্রেফতার হয়েছিলেন আরও এক জন। ধৃত মোট ছ’জনকে তার পর টানা জেরা করা শুরু হয়। তাঁদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানা এলাকা থেকে ঝাড়খণ্ডের তিন বাসিন্দা-সহ আরও ন’জনকে গ্রেফতার করল জেলা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, নাকা তল্লাশিতে গাড়ি থেকে ৩৯ হাজার টাকা, ১৭টি এটিএম কার্ড, সাতটি মোবাইল ও একাধিক সিমকার্ড উদ্ধার হয়েছিল। তা কোথায় কী উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তার সদুত্তর দিতে না পারায় গাড়িতে থাকা পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মূলত তাঁদের বয়ানের ভিত্তিতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়ে জালিয়াতি চক্রের সন্ধান মেলে। মেলে ঝাড়খণ্ড যোগের সূত্রও। ধৃতদের জেরা করে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পারে, ঝাড়খণ্ডের দুই সাইবার জালিয়াতের নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদে এটিএম জালিয়াতির পরিকল্পনা ছিল।
তদন্তকারীদের অনুমান, পুলিশের সন্দেহ এড়াতে চক্রের মাথারা অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকতেন। আলাদা আলাদা সিমকার্ড ব্যবহার করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন মুর্শিদাবাদের প্রতারকেরা। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া চক্রের সদস্যদের খুব একটা দেখা-সাক্ষাৎ হত না। শুক্রবার রাতে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যেই গাড়ি করে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার একটি গোপন আস্তানায় যাচ্ছিলেন জালিয়াতরা। বহরমপুরের কাছাকাছি একটি জায়গায় ছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রশিক্ষকেরা। চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারির খবর শুনেই সাবধান হয়ে যান তাঁরা। নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিলেন। যদিও শেষরক্ষা হল না! শনিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
ধৃত ন’জনকে রবিবার বিশেষ আদালতে পেশ করে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। প্রত্যেকের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানায় পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে বহরমপুর আদালত।