নদিয়ার শিল্পী শুভজিৎ দে-র হাতে গড়া দুর্গাপ্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
জন্মদাত্রী মা ক্যানসারে আক্রান্ত। সংসারের খরচাপাতি সামলে তাঁর চিকিৎসার খরচ টানতে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। বাবা বয়সজনিত কারণে রুজিহীন। সংসারের হাল ধরতে নিজের পড়াশোনার পাটও চোকাতে হয়েছে। রোজগারের তাগিদে অগত্যা মৃন্ময়ীর মূর্তি গড়ার পথ বেছে নিয়েছেন নদিয়ার বাসিন্দা শুভজিৎ দে।
শনিবার কলকাতায় রওনা দেবে শুভজিতের হাতে গড়া একটি দুর্গাপ্রতিমা। তবে এ পথের শুরুটা এত সহজ ছিল না। শান্তিপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপাড়া স্ট্রিটের বাসিন্দা শুভজিতে পূর্বপুরুষেরা প্রচলিত অর্থে মৃশিল্পী নন। মায়ের মাখা আটা, উঠোনের মাটি দিয়ে ছোটবেলা থেকেই মূর্তি গড়ার চেষ্টা করতেন। তবে অর্থাভাবে কোনও দিনই এ নিয়ে প্রথাগত ভাবে শিক্ষার সুযোগ পাননি। শুভজিৎ জানিয়েছেন, স্ত্রী মমতা দে-র উৎসাহেই নেটমাধ্যমে তাঁর শখের বশে গড়া কয়েকটি মূর্তি আপলোড করেন। তা দেখে গত দু’বছর হল বেশ কয়েকটি মিনিয়েচার দুর্গা, কালী এবং অন্যান্য প্রতিমা গড়ে অর্থ রোজগারের সন্ধান পেয়েছেন। মূলত তাঁর রোজগারের অর্থেই চিন্ময়ী মায়ের ক্যানসার চিকিৎসা চলছে।
শুভজিতের গড়া মূর্তি সুদূর কানাডা পৌঁছেছিল গত বছর। চলতি বছরে কলকাতায় তিনটি এবং শান্তিপুর থেকে মূর্তি গড়ার একটি অর্ডার পেয়েছেন তিনি। কাচের বাক্সে প্যাকিং হয়ে শনিবার কলকাতায় দিকে রওনা দেবে এমনই একটি দুর্গাপ্রতিমা।
এই শখের জেরে আয়ের পথ খুঁজে পাওয়া ছাড়া শুভজিতের পারিবারিক পুজো আবার নতুন করে শুরু করা গিয়েছে। তাঁদের তিনশো বছরের পারিবারিক কালীপুজো প্রায় ৪০ বছর ধরে বন্ধ ছিল। তবে গত দু’বছর ধরে শুভজিতের গড়া মূর্তি দিয়েই নতুন করে তাঁদের পরিবারিক পুজো শুরু হয়েছে।