Duare Sarkar

পরিষেবার তারতম্য বিচারেই জিয়ো ট্যাগিং

দুয়ারে সরকারের রাজ্য নোডাল অফিসার জেলাগুলিকে জানিয়েছেন, প্রতিদিন শিবির শুরু হওয়ার আধ ঘন্টার মধ্যে জিয়ো ট্যাগিং করে সংশ্লিষ্ট শিবিরের বিস্তারিত জানাতে হবে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০২
Share:

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের ফর্ম জমা দেওয়ার লাইন। নিজস্ব চিত্র।

বুধবার দুয়ারে সরকার শিবির বসেছে ৭৪৮টি। সব মিলিয়ে ৮০ লক্ষের বেশি মানুষ সরকারি পরিষেবা পেতে হাজির হচ্ছেন ৩৪১টি ব্লক এবং ১২৬টি পুরসভার এই শিবিরগুলিতে। শিবিরে আসা প্রত্যেক মানুষের টেলিফোন নম্বর রেখে দিচ্ছে সরকার। নেওয়া হচ্ছে আবেদন। তার যথাযথ বিশ্লেষণ সারতেই প্রতিটি শিবিরের জিয়ো ট্যাগিং শুরু করা হয়েছে। অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ দেখে ওই শিবিরগুলিতে কী ধরনের আবেদন জমা পড়ছে এ বার তার বিশ্লেষণ শুরু হবে বলে নবান্ন সূত্রের দাবি।

Advertisement

দুয়ারে সরকারের রাজ্য নোডাল অফিসার জেলাগুলিকে জানিয়েছেন, প্রতিদিন শিবির শুরু হওয়ার আধ ঘন্টার মধ্যে জিয়ো ট্যাগিং করে সংশ্লিষ্ট শিবিরের বিস্তারিত জানাতে হবে। এক কর্তা জানান, কিছু কিছু স্থান থেকে শিবির নিয়ে অভিযোগ আসছে। কিছু কিছু শিবিরে আবেদন বেশ কম। কেন তার বিশ্লেষণ প্রয়োজন। জিয়ো স্পেসিয়াল বিশ্লেষণ করে কোন কোন স্থানে মানুষের আগ্রহ বেশি বা কম তাও সরকার যাচাই করতে চাইছে। এর ফলে সরকারের জনপ্রিয়তার একটি ভৌগোলিক প্রেক্ষিত তৈরি হবে।

সেটা কী ভাবে?

Advertisement

নবান্নের এক কর্তার কথায়,‘‘আমরা দেখতে চাইছি, কোন ভৌগোলিক অবস্থান থেকে কী ধরনের আবেদন আসছে। কেন কোনও নির্দিষ্ট স্থান থেকে বিধবা ভাতার আবেদন আসছে, কেনই বা কোনও স্থান থেকে এখনও খাদ্যসাথীর আবেদন বা পরিমার্জনের আবেদন পড়ছে, কেন কোনও নির্দিষ্ট এলাকা থেকে জনজাতি সার্টিফিকেট পেতে বেশি বা কম আবেদন আসছে। এ সব দেখেই সরকারি পরিষেবা কোথায় পৌঁছেছে আর কোথায় কোন পরিষেবা পৌঁছয়নি তার বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হবে। সেই মতো সরকার পরিষেবা পৌঁছে দেবে।’’

নবান্নের দাবি, ১ ডিসেম্বর ৬৬০টি শিবিরে ২ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ এসেছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৪৮টি শিবিরে এসেছেন ৮০ লক্ষের বেশি মানুষ। সকলেই যে সুবিধা পেতে এসেছেন তা নয়। অনেকেই শিবিরে এসে খোঁজ খবর করে গিয়েছেন। সবার টেলিফোন নম্বর সরকার রেখে দিচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে তাঁদের সঙ্গে চাইলে সরকার যোগাযোগ করতে পারে। গত ১৫ ডিসেম্বর সবচেয়ে বেশি ৮ লক্ষের বেশি মানুষ শিবিরে হাজির হয়েছিলেন। প্রতিদিনই

শিবিরে প্রথমবারের জন্য খোঁজ নিতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে ৪০ দিনের শিবির শেষে প্রায় ৩ কোটি মানুষ শিবিরে আসতে পারেন বলে নবান্ন মনে করছে। রাজ্যে এখন ৭ কোটি ভোটার। অথচ বিধানসভা নির্বাচনের শেষ লগ্নে যদি ৩ কোটি মানুষকে এমন পরিষেবা ভিত্তিক শিবিরে আনা যায় তা অভূতপূর্ব বলেই মনে করছেন নবান্নের কর্তারা।

বেশ কয়েকটি জেলায় শিবির পরিদর্শন করে আসা অফিসারদের ধারণা, পরিষেবা পেতে মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে আবেদনপত্র দিচ্ছেন। তাতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা প্রমাণ পাচ্ছে। কিন্তু এত আবেদনের নিষ্পত্তি যদি সময়ে না হয় তা হলে এই বিশাল ভিড়ই বিধানসভা নির্বাচনের আগে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ভোটার তালিকা সহ ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে পরিষেবার কাজ কতটা নিবিড়ভাবে দেওয়া যাবে তা নিয়েও সংশয়ে জেলায় জেলায় শিবির পরিদর্শন করে আসা সিনিয়র আমলারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement