ফাইল চিত্র।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী জানুয়ারি থেকেই রাজ্য কর্মীদের বেতন বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেতন বাড়তে চলেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষক, পুর-পঞ্চায়েত কর্মী এবং অধীন সংস্থাগুলির কর্মীদেরও। অর্থ দফতরের প্রাথমিক হিসেব, বেতন বৃদ্ধির ধাক্কায় জানুয়ারিতেই বেতন ও পেনশন খাতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। বেতন-পেনশন দিতে এখন প্রতি মাসে ৫২০০ কোটি টাকা লাগে। জানুয়ারিতে তা ৬০০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন অর্থকর্তারা।
নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘হিসেব কষে দেখা যাচ্ছে, মোটের উপরে অতিরিক্ত ২০/২২% খরচ বাড়ছে। তবে তার অর্থ এই নয় যে, সব কর্মীরই বেতন সমহারে বাড়বে। পদ, পদোন্নতি এবং শ্রেণির ভিত্তিতে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধিতে সামান্য তারতম্য থাকতে পারে।’’
যাঁদের জন্য অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অবশ্য মজুরির ভিত্তিতে কর্মরত ঠিকা বা চুক্তি-কর্মী, শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন ধরনের চুক্তিতে কর্মরত কর্মী ও শিক্ষকেরাও রয়েছেন। সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়লে তাঁদের বেতনও কিছুটা হলেও বাড়াতে হবে সরকারকে। অর্থ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক ভাবে ভাবা হয়েছিল, বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নেওয়ার ফলে বছরে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার ধাক্কা আসতে চলেছে। কিন্তু বেতন ও পেনশনের হিসেবনিকেশ যত এগোচ্ছে, দেখা যাচ্ছে, খরচ তার চেয়ে আরও কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। অর্থ দফতর বছরে সর্বাধিক ১২ হাজার কোটির ধাক্কা ধরেই এগোচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে, এই বাড়তি টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে?
অর্থকর্তারা জানাচ্ছেন, চলতি মাস থেকে সেটাই সব চেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত নেওয়া ঋণ ও সুদ শোধ করতেই ৫৬ হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে যাবে। এই পুরো টাকাটাই আবার বাজার থেকে ধার করে তুলে নেওয়ার কৌশল নিয়েছে সরকার। তার ফলে ঋণ নিয়ে কর্মীদের বর্ধিত বেতন মেটানোর সুযোগ কম।
আরও পড়ুন: ‘এগিয়ে চলো, সঙ্গে আছি’, ছাত্রদের মমতা
এক অর্থকর্তা জানাচ্ছেন, উন্নয়নের টাকায় যাতে হাত না-পড়ে। সেই চেষ্টাই চলছে। সেই জন্য যথাসম্ভব অপব্যয় ঠেকানোর চেষ্টা হচ্ছে। কঠোর ভাবে কায়েম করা হচ্ছে আর্থিক শৃঙ্খলা। বিভিন্ন দফতরের খরচ না-হওয়া টাকা ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তার ফলে মাসে ১০০০ কোটি টাকা বাড়তি বার করে আনা যাবে বলে আশা করছেন অর্থকর্তারা।
আরও পড়ুন: মুখ খুলুন আমার হয়ে, ডাক ধনখড়ের