Health

দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন সন্তানদের, শোক ভুলতে বন্ধ্যত্বকরণের পর শিশুর জন্ম দিলেন পঞ্চাশের মহিলা

সন্তানশোকে পাথর হয়ে যান মা। ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদে ডুবে কার্যত জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে ফেলেন তিনি। একাধিক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শেও বিশেষ সুরাহা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২০:৫৯
Share:

শুক্রবার বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন মুর্শিদাবাদের এক মহিলা। প্রতীকী ছবি।

সন্তানশোক ভুলতে বন্ধ্যত্বকরণের পরেও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আবার সন্তানের মা হলেও মুর্শিদাবাদের বছর পঞ্চাশের এক বাসিন্দা। শুক্রবার বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি।

Advertisement

বছর কয়েকের মধ্যে তাঁদের দুই সন্তানকেই দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন রানিতলা থানা এলাকার ওই দম্পতি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দম্পতির সংসারে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। সন্তানশোকে পাথর হয়ে যান মা। ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদে ডুবে কার্যত জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে ফেলেন তিনি। একাধিক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শেও বিশেষ সুরাহা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের প্রত্যেকেরই কমবেশি দাওয়াই ছিল, মহিলাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে একটাই দাওয়াই— সন্তান। তবে বন্ধ্যত্বকরণের পরে কী ভাবে সন্তানের জন্ম দেওয়া সম্ভব?

বন্ধ্যত্বকরণের পর আবার মা হলেন বছর পঞ্চাশের মহিলা। —নিজস্ব চিত্র।

মানসিক রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। সন্তানের জন্ম দিতে দু’টি প্রতিবন্ধকতা ছিল চিকিৎসকদের। প্রথমত, মহিলার বয়সজনিত সমস্যা। দ্বিতীয়ত, সন্তানলাভের পরে বন্ধ্যত্বকরণ অস্ত্রোপচার অর্থাৎ লাইগেশন হওয়ায় জটিলতা। যদিও দুই বাধা কাটিয়েই সন্তানের সুখ পেয়েছেন ওই দম্পতি।

Advertisement

এই অসাধ্যসাধন হল কী ভাবে? বহরমপুরের যে বেসরকারি হাসপাতালের পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই মহিলা সেখানকার চিকিৎসক এসবি কাঞ্জিলাল বলেন, ‘‘রিক্যানালাইজেশন নামে একটি বিরল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এমনটা সম্ভব হয়েছে।’’ ওই হাসপাতালের এই বিশেষ অস্ত্রোপাচারের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক রমেন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘লাইগেশনে (বন্ধ্যত্বকরণে) দু’টি ফ্যালোপিয়ান টিউব কিছুটা কেটে বেঁধে দেওয়া হয়। যাতে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু মিলিত হতে না পারে। রিক্যানালাইজেশনের অর্থ, আবার টিউবের বাঁধা অংশ খোলা এবং কাটা অংশ জুড়ে দেওয়া। এতে সাফল্যের হার খুবই কম। তবে অসম্ভব নয়। আর এই চিকিৎসায় সফল হয়ে গত নভেম্বরে ফের অন্তঃস্বত্তা হয়েছিলেন সন্তানহারা এক মা। বহরমপুর শহরেই অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার মাধ্যমে বিরল এই অস্ত্রোপচারের দৃষ্টান্ত অনেককে উদ্বুদ্ধ করবে।’’

এই ঘটনায় খুশির হাওয়া জেলার চিকিৎসকদের মধ্যে। এবং আবার সন্তান পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি ওই দম্পতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement