সপরিবারে বন্ধুপ্রকাশ। —ফাইল চিত্র
জিয়াগঞ্জে নিহত বন্ধুপ্রকাশ পাল এবং তাঁর স্ত্রী বিউটি পালের আত্মীয়েরা শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। ভবানী ভবনেও যান তাঁরা। তিন খুনের তদন্ত কী ভাবে হচ্ছে, সিআইডি-র আইজি এবং ডিআইজি সেটা তাঁদের বোঝান। আত্মীয়েরা পরে জানান, মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা সন্তুষ্ট।
পুলিশ জানায়, ৮ অক্টোবর, দশমীর দুপুরে জিয়াগঞ্জের লেবুবাগানের বাড়িতে খুন হন বন্ধুপ্রকাশ, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি এবং তাঁদের ছ’বছরের ছেলে অঙ্গন। খুনের ঘটনায় উৎপল বেহেরা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতারণার একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে সৌভিক বণিক নামে বন্ধুপ্রকাশের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে। তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বৃহস্পতিবার সাগরদিঘি থানায় বেলা সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিহতদের কিছু আত্মীয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখনই ঠিক হয়, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী ও সিআইডি-কর্তাদের কাছে ওই আত্মীয়দের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হবে।
সিআইডি সূত্রের খবর, হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত উৎপল যে-স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, বন্ধুপ্রকাশ ও তাঁর স্ত্রীর আত্মীয়দের তা ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। দেখানো হয়েছে হত্যাকাণ্ডের পুনর্গঠনের ভিডিয়ো। এক পুলিশকর্তা জানান, একই পরিবারের সকলেই খুন হয়ে যাওয়ায় তাঁদের আত্মীয়েরা খুব ভেঙে পড়েছেন। খুনি যাতে শাস্তি পায়, সেই বিষয়ে আশ্বাস চান তাঁরা। সেই জন্যই তাঁদের পাশে থাকা চেষ্টা করছে পুলিশ ও প্রশাসন।
নবান্ন থেকে বেরিয়ে দীপ্তিমান সরকার ও রাজেশ ঘোষ নামে বন্ধুপ্রকাশের দুই আত্মীয় জানান, বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের সাহায্য করছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ওই আমরা সন্তুষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হলে তাঁকে যেন জানানো হয়।’’
এ দিন দুপুরে রাজ্য ফরেন্সিক বিভাগের একটি দল জিয়াগঞ্জের লেবুবাগানে বন্ধুপ্রকাশের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে রক্ত ও খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে তারা। ফরেন্সিক দলের আধিকারিক চিত্রাক্ষ সরকার বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলোর ফরেন্সিক পরীক্ষা হবে।’’
ফরেন্সিক দলের অন্য এক কর্তা জানান, আততায়ীর হাত ও পায়ের ছাপের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। বন্ধুপ্রকাশের দেহ যে-ঘরে পড়ে ছিল, সেখানে কোথায় কোথায় আততায়ীর হাতের ছাপ রয়েছে, তা-ও খুঁটিয়ে দেখা হয়। তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বাড়ির পিছনের জঙ্গল থেকেও।