মানুষের সচেতনতার স্বার্থে মেলার আয়োজন হচ্ছে। কড়া শর্ত চাপিয়ে তা আটকানো উচিত নয়— সাংসদ মেলার অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নে আসানসোল পুরসভাকে এমনই পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি হরিশ টন্ডন নির্দেশ দিলেন, কোনও কিছুতে প্রভাবিত না হয়ে অনুমতির বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে মেয়রকে।
আসানসোল রেল স্টেডিয়ামে ১৩-১৫ জানুয়ারি ওই মেলার আয়োজন করছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু মেলার অনুমতি দেওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার দ্বন্দ্ব গড়িয়েছিল আদালতে। এ দিন শুনানির পরে বিচারপতি টন্ডন নির্দেশ দেন, ফের মেলার মাঠ পরিদর্শন করে মেয়রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশমতো পদক্ষেপ করা হবে।’’ আর বাবুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানুষের স্বার্থে এই মেলা। মেয়র ও প্রশাসনের কর্তাদের আবেদন, আসুন সবাই মিলে মেলা সফল করি।’’
মেলার আয়োজক সংস্থার আইনজীবী সুরেন্দ্রকুমার কপূর আদালতে জানান, মাঠের জন্য রেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি, দমকলের ছাড়পত্র মিলেছে। কিন্তু নানা কারণ দেখিয়ে পুরসভা অনুমতি দিচ্ছে না। মেলার মাঠ ঘুরে দেখে পুরসভার বিশেষজ্ঞ দল একগুচ্ছ ত্রুটি পেয়েছে জানিয়ে সোমবার মেয়র নির্দেশ দেন, সেগুলি শুধরে মেলা কমিটিকে ফের আবেদন করতে হবে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, মাঠে নিকাশি ও শৌচাগারের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়নি। আশপাশে যে সব স্কুল রয়েছে, সেগুলির কাছে অনুমতি নেওয়া হয়নি। দূষণ
নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্রও নেয়নি মেলা কমিটি।
বিচারপতি টন্ডন এ দিন রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলা বা বইমেলার সময় কি নিকাশি নিয়ে ভাবেন? রেল স্টেডিয়ামে আগেও অনুষ্ঠান হয়েছে। তখন নিকাশি, পার্কিং গুরুত্ব পেয়েছিল কি?’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মেলার জন্য স্কুল অনুমতি দেওয়ার কে?’’ রাজ্যের আইনজীবী লক্ষ্মীবাবু দাবি করেন, সাংসদ মেলায় মুম্বইয়ের গায়ক, গায়িকারা আসবেন। স্টেডিয়ামে আইন-শৃঙ্খলা সমস্যা হলে সামলানো মুশকিল হবে। বিচারপতি বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলা হলে, অন্য কোথাও কোনও অনুষ্ঠান হবে না বলতে চান! সে ক্ষেত্রে কিন্তু নির্দেশ দেব, ওই সময় রাজ্যে কোথাও
কোনও অনুষ্ঠান করা যাবে না। এর আগে মকর সংক্রান্তির সময় কোথায় কী অনুষ্ঠান হয়েছে, রাজ্যের কাছে তার নথিও চাইব।’’