স্বাগত মৌসুমী কয়াল। খড়্গপুরে।ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
ভোট মরসুমে রাজ্যে এখন শাসক বিরোধী গণতান্ত্রিক যাবতীয় শক্তির জোটের আবহ। খড়্গপুরে এক সভায় এসে সেই জোটের পক্ষেই সওয়াল করলেন কামদুনি-কাণ্ডের প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী কয়াল। বললেন, ‘‘একদিন এই বাংলায় অন্ধকার থেকে আলোর দিশা আপনারা দেখাতে পারবেন। কারণ সাধারণ মানুষের জোট সবচেয়ে বড় জোট।’’
খড়্গপুরের রবীন্দ্রপল্লিতে এ দিন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির উদ্যোগে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। মৌসুমী ছাড়াও সেখানে ছিলেন কামদুনির প্রতিবাদী শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায়, সংগঠনের রাজ্য সম্পাদিকা শ্যামাশ্রী দাস, জেলা সম্পাদিকা ভারতী রাণা প্রমুখ। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বামপন্থী মহিলা সংগঠনের পক্ষ থেকে এই আয়োজন তাৎপর্যপূর্ণ। খড়্গপুর সদর বিধানসভা এলাকায় ইতিমধ্যে বাম-কংগ্রেস জোটের আবহ দেখা গিয়েছে। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি প্রবীণ বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহনপালের এই কেন্দ্রে প্রার্থী দেয়নি বামেরা। সংবর্ধনা সভাতেও ছিল জোটের সুর। বামপন্থী মহিলা সংগঠনের অনুষ্ঠানে মৌসুমীকে পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনা জানান মহিলা কংগ্রেসের জেলা নেত্রী হেমা চৌবে।
বক্তারা সকলেই এক বাক্যে তৃণমূল সরকারের সমালোচনায় সরব হন। কামদুনির প্রতিবাদী শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল ইস্তাহার প্রকাশ করে ‘নব বাংলা’র সূচনার কথা বলেছে। গত পাঁচ বছরে আমরা ‘অভিনব বাংলা’ দেখেছি। কোনও ধর্ষণের ঘটনাকে তুচ্ছ ঘটনা বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকে চড় মারতে দেখেছি। আমার মতো অনেককে বদলি হতে হয়েছে। তাই এ বার নিজেরা বিচার করে ভোট দেবেন।’’
সব রকম অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মৌসুমী। কামদুনি-কাণ্ডের বিবরণ দিতে গিয়ে তাঁর চোখে জল চলে আসে। মৌসুমীর কথায়, “সব সময় মনে রাখবেন যাঁরা ভয় পান, তাঁদের ভয় দেখানো হয়। আপনারা ভয় পাবেন না। প্রতিবাদ করবেন। নিজেরা জোটবদ্ধ করে একগুচ্ছ লাঠি হয়ে উঠবেন। কোনও নেতা-মন্ত্রীকে ভয় পাবেন না। মনে রাখবেন, ওঁদের জন্য আমরা নয়, আমাদের জন্য ওঁরা।” ভবিষ্যতে কি রাজনীতিতে আসবেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মৌসুমী বলেন, ‘‘রাজনীতিতে যেতে চাই না। আমি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। আমাদের একটাই লক্ষ্য— অন্যায়ের প্রতিবাদ।”