—ফাইল চিত্র
মাসতুতো ভাইকে রাখি পরাতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছিল এক কিশোরী। ঘটনার পরে তার মা পুলিশে অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেন। গত বছর অগস্ট মাসের এই ঘটনার পর চার মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু নিখোঁজ কিশোরীর কোনও হদিস দিতে পারেনি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার পুলিশ। এমনকি, নির্দিষ্ট ভাবে অভিযুক্তদের নাম জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে এ বার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই কিশোরীর মা। তাঁর আইনজীবী সোনম বসু বলছেন, ‘‘পুলিশ মেয়েটির কোনও খোঁজ করেনি। কার্যত কোনও তদন্তই করেনি। সন্দেহ করা হচ্ছে, মেয়েটিকে পাচার করা হয়েছে। তাই আমরা চাইছি, দাসপুর থানা বা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের বদলে কোনও স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হোক।’’ আগামী ৮ জানুয়ারি মামলাটি শুনানি হতে পারে বলে খবর।
নিখোঁজ কিশোরীর মা মামলার আবেদনপত্রে বলেছেন, তাঁর ১৭ বছরের মেয়ে গত ৩ অগস্ট রাখি উৎসবের জন্য মাসির বাড়ি যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। রাতের বেলা না ফিরলে নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজির করেন। সে সময় তিনি জানতে পারেন, গ্রামেরই দুই যুবক কিশোরীকে অপহরণ করেছে। এর পরেও তিনি মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু মেয়েকে ফিরে না পেয়ে তিনি দাসপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ জানান। তার পর থেকে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেনি। তিনি বারবার থানায় হাজিরা দেওয়া সত্ত্বেও মেয়ের সম্পর্কে কোনও তথ্যই জানতে পারেননি। ১০ নভেম্বর তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এসপিকে অভিযোগ জানান। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।
আদালত সূত্রের খবর, নিখোঁজ পরিবারের মায়ের দাবি, এই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি বা অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হোক।
অনেকেই বলছেন, এ রাজ্য থেকে এমনিতেই বহু পাচারের ঘটনা ঘটে থাকে। লকডাউনের পর সেই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। অক্টোবর মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে পাচার রুখতে রাজ্যগুলিতে সতর্ক থাকতেও বলা হয়েছে। সেই লকডাউনের মাঝেই এ রাজ্যের এক কিশোরী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরেও পুলিশের তরফে ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্য পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, তদন্তের কিছু অগ্রগতি হয়েছে। হাইকোর্ট জানতে চাইলে তা সবিস্তারে জানানো হবে। তার পরে আদালত যা নির্দেশ দেবে তা পালনও করা হবে।