প্রতীকী চিত্র।
তেহট্ট থেকে কালিম্পং, বরাহনগর থেকে শেওয়াফুলি— গত কয়েক দিনে যাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সংস্পর্শে বহু মানুষ এসেছিলেন। তেহট্ট এবং কালিম্পঙের আক্রান্তেরা এসেছিলেন ভিন রাজ্য থেকে। ফলে তাঁরা অনেকের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। বরাহনগরের যে বৃদ্ধ আক্রান্ত হয়েছেন, তিনিও অনেকের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। আবার শেওড়াফুলির প্রৌঢ়ের লোকাল ট্রেনে চড়ার খবরও মিলেছে। সব মিলিয়ে এই আক্রান্তদের থেকে অন্য অনেকেরই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। গোটা ঘটনায় রীতি মতো উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। বিষয়টি কড়া হাতে মোকাবিলা করতে চাইছে প্রশাসন।
তেহট্টের করোনা আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে আসা অনেককে এখনও পর্যন্ত চিহ্নিত করা গিয়েছে। তৎপরতার সঙ্গে তাঁদের চিহ্নিত করে গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে। দিল্লি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে শিয়ালদহ, সেখান থেকে লালগোলা প্যাসেঞ্জারে বেথুয়াডহরি, তার পর অটো করে তেহট্টে পৌঁছয় ওই পরিবার। তার পর আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছিলেন পরিবারের লোকজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশী এবং দোকান-বাজারের লোকজনও। এক এক করে তাঁদের চিন্থিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যে ৬৭ জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।
অন্য দিকে, বরাহনগরের আক্রান্ত বৃদ্ধের সংস্পর্শে আসা ২২ জনকে ইতিমধ্যেই গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওই বৃদ্ধের ভাই এখন পঞ্চসায়রে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ওই বৃদ্ধের রক্তের নমুনা সংগ্রহকারী, পরিবারের লোকজন, প্রতিবেশী কয়েক জন, চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও পাঠানো হয়েছে গৃহ-পর্যবেক্ষণে। এদের মধ্যে তিন জনকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। বাকি কয়েক জনকে রাজারহাটের কোয়রান্টিন সেন্টারেও পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘গোষ্ঠী’ নয়, ‘স্থানীয়’ সংক্রমণের স্তরে ভারত, লকডাউনের সুফল মিলছে দাবি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের
বড়বাজারের কাপড়-ব্যবসায়ী এবং শেওড়াফুলির বাসিন্দা কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাঁদের পরিবারকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে। শেওড়াফুলির করোনা-আক্রান্ত বৃদ্ধ গত ১৬ মার্চ একটি প্যাথলজি সেন্টারে যান। সেখানে এক চিকিৎসককেও তিনি দেখান। এই ঘটনা জানার পর তাঁদেরও গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিল্লির মসজিদে জমায়েত, কোয়রান্টিনে পাঠানো হল ২০০০ জনকে
কম্যান্ড হাসপাতালের এক চিকিৎসকও ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। তিনি দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছিলেন। তার পরে তিনি রোগী দেখেছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই তাঁর পরিবার-সহ কয়েক জন পরিচিতর খোঁজ মিলেছে।
একই ভাবে উত্তরবঙ্গের কালিম্পঙের বাসিন্দা এক মহিলা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সোমবার মারা গিয়েছেন। তিনি চেন্নাই থেকে ফেরার পর শিলিগুড়িতে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। তার কয়েক দিন পর থেকে জ্বর আসে। এই সময় যাঁরা তাঁর সংস্পর্শে এসেছেন, তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের আক্রান্ত মহিলার সংস্পর্শে এসেছেন মোট ১৪ জন। তাদেরও গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানা ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের সঙ্গে। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা, তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি প্রকাশযোগ্য বলে বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)