প্রতীকী ছবি
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভ অব্যাহত। শনিবার সেই তালিকায় সংযোজিত হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের সামনে অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে পড়ুয়াদের একাংশ কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দাবিতে অনশনরত দুই পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে। এ দিন সেখানে কয়েক জন পড়ুয়া অনশন শুরু করেছেন। উত্তরবঙ্গ এবং আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন চলছে।
গত শুক্রবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের বোর্ড অব স্টাডিজ় এবং স্নাতকোত্তরের ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল সর্বসম্মত ভাবে পরীক্ষা অফলাইনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অধীনস্থ কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৩ জুন সিন্ডিকেটের বৈঠকে। কিন্তু এরই মধ্যে এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে দেন পড়ুয়াদের একাংশ। বিক্ষোভকারীদের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র স্বর্ণেন্দু নন্দী জানিয়েছেন, তাঁদের মাত্র দেড় মাস ক্লাস হয়েছে। পাঠ্যক্রম শেষ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে অফলাইনে পরীক্ষা দেওয়া তাঁদের পক্ষে অসম্ভব।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউটাউন ক্যাম্পাসে পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে অনশনরত দুই পড়ুয়া গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাঁদের সল্টলেকের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের পড়ুয়াদের একাংশ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছিলেন পরীক্ষা অফলাইনে হলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হবে এবং অনলাইন এবং অফলাইন (ব্লেন্ডেড) মোডে পরীক্ষা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি। আগের ঘোষণা অনুযায়ী পরীক্ষা ২৭ মে থেকে অফলাইনে শুরু হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতি চললে তাঁরা পরীক্ষা বয়কটের ডাক দেবেন।
আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ুয়া বিক্ষোভ চলছে। শনিবার সকাল থেকে কয়েক জন পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে অনশন শুরু করেছেন। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ জন কর্মীকে ঘেরাও করে রাখার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছে তাঁদের ঘেরাও মুক্ত করে। তখন তাঁদের উপরে পুলিশ লাঠি চালায় বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিয়োয় (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) অভিযোগ করেন ‘পড়ুয়াদের’ একাংশ। যদিও কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনাওয়ানে বলেন, “পুলিশের হাতে লাঠি ছিল না। কোনও পড়ুয়াকে আঘাতও করা হয়নি।”
আগামী সোমবার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের কমিটির বৈঠক স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে অফলাইন না অনলাইনে পরীক্ষা হবে, সেই সিদ্ধান্ত পিছিয়ে গেল। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অফলাইনে পরীক্ষার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা শীঘ্রই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন।