মোগলমারির প্রত্নস্থল। — ফাইল চিত্র।
ইতিহাসপ্রেমী, ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে আলাদা আবেদন রয়েছে মোগলমারির। বৌদ্ধ প্রত্নস্থল হিসেবে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের এই এলাকা এখন পরিচিত নাম। তাই শুধু রাজ্য নয়, দেশ-বিদেশের পর্যটকের কাছে মোগলমারিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে এখানে অতিথি নিবাস তৈরির তোড়জোর শুরু করেছে পর্যটন দফতর।
খননকার্যে উদ্ধার হওয়া ষষ্ঠ-দ্বাদশ শতাব্দীর বৌদ্ধ মঠের কাঠামোই মোগলমারির প্রধান আকর্ষণ। খননে নানা প্রত্নসামগ্রীও উদ্ধার হয়েছে। ফলে, আগ্রহী ছাত্রছাত্রী তো বটেই, ইতিহাসপ্রিয় লোকজনও এখানে আসতে চাইবেন। সে কথা মাথায় রেখেই গোটা এলাকা সাজানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে পর্যটন দফতরের এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে কলকাতায়। সেখানে ঠিক হয়েছে, প্রথমে খতিয়ে দেখা হবে এলাকায় কতটা জমি রয়েছে। কতটা সরকারি জমি, কতটা রায়তি, সেখানে কী চাষ হয়, পর্যটন কেন্দ্র হলে এলাকার অর্থনীতির কী বদল হবে— দেখা হবে সবই। তারপরই পরিকল্পনা তৈরি করে পাঠানো হবে রাজ্যের কাছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “মোগলমারি পর্যটকদের কাছে ভীষণ আকর্ষণীয় স্থান। তাই উন্নত পরিকাঠামো তৈরির জন্য সম্প্রতি বৈঠক হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।”
মোগলমারির এক দিকে ছোট ঢিবি, নাম সখীসেনার ঢিবি। বহু দিন ধরেই মাটি খুঁড়ে এখানে মিলত পুরনো মাটির জিনিস। সাধারণ গ্রামবাসী তার মাহাত্ম্য বুঝতেন না। ২০০২-’০৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক অশোক দত্তের নেতৃত্বে এখানে শুরু হয় খননকাজ। আলোকপ্রাপ্ত হয় অজানা ইতিহাসের এক অধ্যায়। এহেন মোগলমারিতে যাওয়ার জন্য ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে গ্রাম পর্যন্ত রাস্তা হয়েছে। হতে চলেছে অতিথি নিবাস। তবে সব থেকে আগে জরুরি সংগ্রহশালা। আর পর্যটকদের জন্য দোকান-বাজার, আশপাশের এলাকার সৌন্দর্যায়ন।
সেই লক্ষ্য পূরণে আপাতত জমি দেখা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জমি মিললে পরিকল্পনা পাঠানো হবে পর্যটন দফতরে। টাকা পেলে কাজ শুরু হবে।