গোলমালের শুরু বর্ষবরণের রাতে, সাউন্ড বক্সে তারস্বরে গান বাজানো নিয়ে। অভিযোগ, তার পর থেকেই বহিরাগত দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক নিয়ে পাড়ায় ঢুকে মহিলাদের লক্ষ করে কটূক্তি ও গালিগালাজ করে। বুধবার রাতে ওই দুষ্কৃতীরাই ফের ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ চালাল বাসিন্দাদের উপর।
রাজ্যের প্রধান প্রশানসিক ভবন নবান্ন থেকে সিকি কিলোমিটার দুরে শিবপুরের আনন্দকুমার রায়চৌধুরী লেনের এই ঘটনায় কিছু বাড়িতে ভাঙচুরও করা হল। মারধরের হাত থেকে বাঁচলেন না মহিলারাও। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশবাহিনী ও র্যাফ নামাতে হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ৩১ ডিসেম্বরের রাতে জোরে সাউন্ড বক্স বাজানো নিয়ে দু’দল যুবকের মধ্যে গোলমাল হয়। যাঁরা গান বাজিয়ে বর্ষবরণের উৎসবে মেতেছিলেন তাঁদের দাবি, অনুষ্ঠান পণ্ড করতে মোটরবাইকে চেপে কয়েক জন দুষ্কৃতী এসে গালিগালাজ শুরু করে। অভিযোগ, এক যুবক প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর শুরু করে। পরে পাড়ার লোকজন বেরিয়ে এলে ওই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেলেও বুধবার রাত ১১টা নাগাদ প্রায় ৩০-৪০ জনের একটি সশস্ত্র বাহিনী এসে ফের ওই পাড়ায় আক্রমণ করে। মহিলারাও আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় পাঁচ-ছ’টি বাড়ি। আতঙ্কিত বাসিন্দারা দরজা বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দারা দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গোটা এলাকা আতঙ্কে থমথম করছে। রিঙ্কু সাউ নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, ‘‘৩১ ডিসেম্বরের পর থেকে একদল বহিরাগত দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে এসে মহিলাদের লক্ষ করে অশ্লীল গালিগালাজ করছিল। গতকাল রাতে ৩০-৪০ জন দুষ্কৃতী তলোয়ার, রড, লাঠি নিয়ে আমাদের পাড়ায় আক্রমণ করে। ভাঙচুর চালায়। মেয়েদেরও মারধর করে। নবান্নের সামনে বাড়ি হলেও আমরা আতঙ্কে ভুগছি।’’ শম্পা দাস নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘ঠিক সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে না পড়লে অনেক বড় ঘটনা ঘটতে পারত। কারণ ওরা নেশাগ্রস্ত ছিল।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (দক্ষিণ) গুলাম সারোয়ার বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পরে আমরা সঙ্গে সঙ্গে বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে পৌঁছনোর পরেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। ঘটনায় এক জন মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’