সরকারি প্রকল্পেও বিদ্যুত্‌ সংযোগে দেরি, ভোগান্তি

সরকারি প্রকল্পেও বিদ্যুত্‌ সংযোগ দিতে দেরি করার অভিযোগ উঠল বিদ্যুত্‌ দফতরের বিরুদ্ধে। ফলে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও তা চালু করা যায়নি। সেচের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনায় বিদ্যুত্‌ দফতরের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা যেমন ক্ষুব্ধ তেমনি ক্ষুব্ধ প্রশাসনিক কর্তারাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০৭
Share:

সরকারি প্রকল্পেও বিদ্যুত্‌ সংযোগ দিতে দেরি করার অভিযোগ উঠল বিদ্যুত্‌ দফতরের বিরুদ্ধে। ফলে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও তা চালু করা যায়নি। সেচের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনায় বিদ্যুত্‌ দফতরের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা যেমন ক্ষুব্ধ তেমনি ক্ষুব্ধ প্রশাসনিক কর্তারাও। জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে বারেবারেই বিদ্যুত্‌ দফতরকে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানালেও কেবলমাত্র দফতরের উদাসীনতায় তা কার্যকরী হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন উপভোক্তারা। কেন সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুত্‌ দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সার্কেল ম্যানেজার অমলেন্দু মাইতির কথায়, “সাধারণত সরকারি ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েই কাজ করা যায়। এক্ষেত্রে হয়তো কোথাও কোনও জটিলতা থাকতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তবেই বলতে পারব।” জেলা পরিষদের বিদ্যুত্‌ ও অচিরাচরিত শক্তির স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, “আগে অনেক ক্ষেত্রেই দেরি হত এটা ঠিক। তবে এখন দ্রুত গতিতে সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। যেগুলি বাকি রয়েছে সেগুলির ক্ষেত্রেও দ্রুত সংযোগ দিয়ে দেওয়া হবে।”

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেচের জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় নলকূপ খনন করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুত্‌ সংযোগ না দেওয়ায় তার বেশ কয়েকটি চালু করা যায়নি। তার মধ্যে এমনও রয়েছে যেখানে ২০১২ সালে বিদ্যুত্‌ সংযোগের জন্য বিদ্যুত্‌ দফতরে শুধু আবেদন জানানো হয়েছিল এমন নয়, বিদ্যুত্‌ দফতরের দাবি মতো টাকাও জমা দিয়ে দেওয়া হয়। তবু বিদ্যুত্‌ সংযোগ দেওয়া হয়নি! প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামের নলবনা, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের জামুয়া, জামবনি ব্লকের নিশ্চিন্তা - এই তিনটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে দু’টি ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে ও ১টির ক্ষেত্রে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে টাকা জমা দেওয়া হয়। দেখা যায়, ২০১৪ সালেও সেখানে বিদ্যুত্‌ সংযোগ দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের বৈঠকে হইচই হতে গত সপ্তাহে নলবনা ও জামুয়াতে বিদ্যুত্‌ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরকম আরও ১১টি প্রকল্প বিদ্যুত্‌হীন থেকে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিনপুর-১ ব্লকের কাঁটাপাহাড়ি, সাঁকরাইলের ডুমুরিয়া, তিলাবনী, ফুলবেড়িয়া প্রভৃতি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জল হোক বা সেচ, যে কোনও প্রকল্পই হোক না কেন বিদ্যুত্‌ সংযোগ ছাড়া তা চালু করা যাবে। যাতে প্রকল্প শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংযোগ মেলে সে জন্য আগে থেকেই বিদ্যুত্‌ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে টাকাও জমা দিয়ে দেওয়া হয়। সেই এলাকায় বিদুত্‌ সংযোগ দিতে কত টাকা খরচ হবে তা দেখেই বিদ্যুত্‌ দফতর টাকা জমা দেওয়ার কথা জানায়। অর্থাত্‌ সেক্ষেত্রে নিশ্চয় বিদ্যুত্‌ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা থাকার কথা নয়। তা সত্ত্বেও সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না কেন?

Advertisement

বিদ্যুত্‌ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বাতিস্তম্ভ থাকে না, কোথাও আবার পুরনো ট্রান্সফরমার বদলের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, নতুবা সেই এলাকায় লো ভোল্টেজ হয়ে যেতে পারে। এসব নানা কারনে দেরি হয়। এখানে প্রশ্ন ওঠে, বিদ্যুত্‌ দফতর সব কিছু দেখেই তো সংযোগ দেওয়ার জন্য টাকা জমা নেয়। তাহলে টাকা জমা নেওয়ার পর কেন সেই কাজগুলি আগে থেকে করে রাখে না। কেন লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প রূপায়নের পর তা বিদ্যুত্‌ সংযোগ না থাকার কারনে বছরের পর বছর পড়ে থাকে। সাধারণ মানুষ প্রকল্পের উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হন? এসব প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি। কর্মাধ্যক্ষের অবশ্য দাবি, “আগে জেলা পরিষদ এ বিষয়ে মাথা ঘামাত না। ফলে প্রায় ২ হাজার প্রকল্প বিদ্যুত্‌হীন হয়ে পড়ে ছিল। আমরা আসার পর দ্রুত গতিতে সংযোগ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। প্রায় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি বাকি। সেগুলির ক্ষেত্রেও দ্রুত সংযোগ দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement