সঙ্গী অভাব, তবু লড়াই ছাড়তে নারাজ মীনাক্ষী

নতুন বই কিনে দেওয়ার সামর্থ ছিল না বাবার। তাই অন্যদের কাছ থেকে পুরনো বই নিয়ে পড়তে হয়েছে। আর তা দিয়েই এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪১০ নম্বর পেয়েছে কাঁথি থানার মৈশালি ত্রৈলোক্য বিদ্যাপীঠের ছাত্রী মীনাক্ষী ষড়ঙ্গী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০১:১৮
Share:

মীনাক্ষী ষড়ঙ্গি। ছবি: সোহম গুহ।

নতুন বই কিনে দেওয়ার সামর্থ ছিল না বাবার। তাই অন্যদের কাছ থেকে পুরনো বই নিয়ে পড়তে হয়েছে। আর তা দিয়েই এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪১০ নম্বর পেয়েছে কাঁথি থানার মৈশালি ত্রৈলোক্য বিদ্যাপীঠের ছাত্রী মীনাক্ষী ষড়ঙ্গী।

Advertisement

মাধ্যমিকেও ৭৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছিল মীনাক্ষী। অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করে আগামী দিনে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখে মীনাক্ষী। কিন্তু সেই স্বপ্নের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র। কাঁথি থানার নাটদিঘি গ্রামে মীনাক্ষীদের সম্পদ বলতে বিঘে দুই জমি। মীনাক্ষীর বাবা সীতারাম ষড়ঙ্গী অন্যের জমিতে চাষের কাজ করেন। স্ত্রী আর তিন মেয়ে নিয়ে অভাবের সংসার। তাই ইচ্ছে থাকলেও মেয়েদের পড়ার জন্য নতুন বই বা গৃহশিক্ষক-কোনও কিছুরই ব্যবস্থা করতে পারেননি। এর মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়ে আর্থিক দেনায় জর্জরিত তিনি।

তবে এত অভাবের মধ্যেও থেমে থাকার মেয়ে নয় মীনাক্ষী। অদম্য জেদ আর পড়াশোনার প্রতি তীব্র আগ্রহেই নানা প্রতিকুলতার মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে সে। উচ্চ মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৮২, ইংরাজিতে ৮০, অঙ্কে ৮০, রসায়নে ৮৩, পদার্থবিজ্ঞানে ৭১ ও জীবন বিজ্ঞানে ৮৫। তবে মীনাক্ষীকে নিয়ে আশাবাদী স্কুলের শিক্ষিকারাও। তাঁদের মতে, আগামীদিনে পড়ার সুযোগ পেলে মীনাক্ষী আরও ভাল ফল করবে। কিন্তু কলেজে পড়ানোর মতো কোন আর্থিক ক্ষমতা নেই সীতারামবাবুর। তবে হাল ছাড়ার পাত্রী নয় মীনাক্ষীও। তার বিশ্বাস উপায় একটা হবেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement