ঘটনার সূত্রপাত দুই পড়শির বিবাদ থেকে। এক জন শাসক দলের কর্মী, অন্য জন সিপিএম সমর্থক। দলীয় কর্মীর আবেদনে সেই কোন্দল মেটাতে সালিশিসভা ডেকেছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। সিপিএম কর্মীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির মানিকজোড় গ্রামের সেই সভায় গিয়ে তৃণমূলের লোকেদের হাতে সপরিবার আক্রান্ত হন তিনি। বেধড়ক মার খেয়েছেন। শ্লীলতাহানির চেষ্টা হয়েছে তাঁর কিশোরী মেয়ের।
স্থানীয় বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার রাতেই আহত সিপিএম সমর্থক, তাঁর স্ত্রী এবং মেয়েকে মুগবেড়িয়া ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করান। সিপিএম সমর্থকের স্ত্রী এবং মেয়ের মাথার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ভূপতিনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী সুবল জানা বাড়িছাড়া।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে শুক্রবার সকালে ওই সিপিএম সমর্থক দাবি করেন, সংসারের প্রয়োজনে কিছু খড়-বিচালি কিনে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু পড়শি সুবলবাবু গা জোয়ারি করে তা নিয়ে নিতে চান। মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় বাসুদেববেড়িয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য দুর্যোধন দোলুই দু’পক্ষকে স্থানীয় হরিজন প্রাথমিক স্কুলে যেতে বলেন। সিপিএম সমর্থকের অভিযোগ, “রাত ৮টা নাগাদ স্ত্রী-মেয়ে, দুই ছেলেকে নিয়ে সেখানে পৌঁছনো মাত্র সুবল ও তার বাড়ির লোকেরা চেলা কাঠ, বাঁশ দিয়ে আমাদের মারধর করে। মেয়ের শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করে।”
সালিশিসভা ডাকার কথা মেনেছেন দুর্যোধনবাবুও। তাঁর যুক্তি, “এ ধরনের গ্রাম্য বিবাদ মেটাতে সালিশিসভা ডাকার প্রয়োজন হয় আমাদের।” তবে ওই সিপিএম সমর্থক এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি দাবি করেন, “কোনও প্ররোচনা ছাড়া ওই সিপিএম সমর্থকের পরিবারের লোকেরাই আমাদের কর্মী সুবলের পরিবারের উপরে চড়াও হয়। তখনই কেউ কেউ প্রতিরোধ করে।” গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সুবলবাবুর দেখা মেলেনি। তবে তাঁর মেয়ে বলে পরিচয় দিয়ে এক মহিলা দাবি করেন, “ওই সিপিএম সমর্থকের পরিবার আগেও নানা কারণে আমাদের উপরে হামলা করেছে। বাবা বাড়ি ফিরলে, আমরা থানায় পাল্টা অভিযোগ করব।”