খড়্গপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রস্তুতি-প্রচার। —নিজস্ব চিত্র
১৫ অগস্ট সকালে নয়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৪ অগস্ট রাতেই খড়্গপুর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা প্রাপ্তির মুহূর্তটিকে সামনে রেখেই তাঁদের এই উদ্যোগ বলে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যদিও মধ্যরাতে পতাকা উত্তোলনের এই উদ্যোগ যথাযথ নয় বলে দাবি সিপিএম নেতৃত্বের।
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি ভবনগুলিতে। আর প্রথামতো স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে নয়াদিল্লির লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী পতাকা উত্তোলনের পরেই দেশের বিভিন্ন সরকারি ভবনে পতাকা তোলা হয়। আর সে দিনই সূর্যাস্তের আগে পতাকা নামিয়ে দেওয়া হয়। তবে সরকারি ভবন ছাড়া অন্যত্র মধ্যরাতে পতাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে তেমন কোনও বিধিনিষেধ নেই।
১৪ অগস্ট রাতে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান রেলশহরের বুকে আগেও হয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে তৃণমূল মধ্যরাতে পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অনুষ্ঠানে ৫০ জন বৃদ্ধ ও ৩০ জন কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান জওহরলাল নেহরু রাতেই পালন করেছিলেন। তার পরেই ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছিল। সেই ইতিহাস স্মরণে রেখে আমাদের এই কর্মসূচি।”
তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মধ্যরাতে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ঘিরে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। দলের খড়্গপুর জোনাল সদস্য অনিল দাস বলেন, “এটা ওঁদের দলীয় কর্মসূচি। কিন্তু আমরা বরাবর দেখেছি লালকেল্লায় পতাকা উত্তোলনের পরেই সারা দেশে পতাকা উত্তোলন হয়। গভীর রাতে সংগ্রামীদের সম্মান জানানো কতটা সঠিক, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।” এ প্রসঙ্গে সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের প্রতিক্রিয়া, “এখন তো কত কিছুই হচ্ছে। মঞ্চে পুলিশ উর্দি পড়ে নাচলেও সেটা ঠিক। পতাকা উত্তোলন মধ্যরাতে করাটা ওঁদের কাছে ঠিক মনে হয়েছে হয়তো। ওঁরা হয়তো ইতিহাস ভাল জানেন।” এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা দেবাশিসবাবুর কটাক্ষ, “ওঁরা (সিপিএম) তো কোনও দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেননি। তাই স্বাধীনতার ইতিহাস ওঁদের হয়তো জানা নেই।”