সুনিয়া গ্রামের পথে প্রতিনিধিরা।—নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের এডুকেশনিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে রবিবার সুনিয়ায় গেলেন প্রতিনিধিরা। ঘরছাড়া সিপিএম নেতার স্ত্রীকে গণধর্ষণ-খুনের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই সমাজের নানা স্তর থেকে বিভিন্ন সংগঠন সুনিয়ায় গিয়ে আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ দিনও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল নিহত বধূর বাড়িতে গিয়ে তাঁর বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়ির সঙ্গে দেখা করেন। বৃদ্ধ দম্পতি তাঁদের জানান, কী ভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল তৃণমূলের বাহিনী। আনন্দদেব মুখোপাধায়ের অভিযোগ, “খুন, ধর্ষণ এখন এ রাজ্যের সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ প্রশাসন দোষীদের শাস্তি না-দিয়ে উল্টে আড়াল করছে।”
এ দিকে, সুনিয়া-কাণ্ডে ধৃত চন্দন জানা, স্বপন জানা ও মানিকলাল গিরিকে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন কাঁথি আদালতের বিচারক। কাঁথি থানার পুলিশ আদালতের নির্দেশে তিন জনকে পাঁচ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার পর রবিবার কাঁথি আদালতে হাজির করে। গত ১৮ অগস্ট কাঁথি থানার পুলিশ ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে।
রবিবার আইসিডিএস কর্মচারী সমিতির রাজ্য সম্পাদিকা রত্না দত্তের নেতৃত্বেও প্রতিনিধি দল এ দিন সুনিয়ায় যান। ১৭ অগস্টের ঘটনাটিকে পাশবিক বলে রত্নাদেবীর অভিযোগ, “সারা রাজ্যেই আইসিডিএস মহিলা কর্মীদের উপরে পরিকল্পিত অত্যাচার চালছে। অথচ প্রশাসন নির্বিকার।” তিনি জানান, এর প্রতিবাদে আগামী ২৬ অগস্ট সমিতির পক্ষ থেকে রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হবে। রাজ্য সম্পাদিকার সঙ্গে রাজ্য কমিটির সদস্যা, উত্তর ২৪ পরগনা, বর্ধমান, হাওড়া, কলকাতা ও পূর্ব মেদিনীপুরের সম্পাদিকারা ছিলেন।
মেদিনীপুর শহরে মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
দু’টি সংগঠনের পক্ষ থেকেই মৃতার শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে কাপড় জামা ও খাবার দাবার তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে এখনও কার্যত এক ঘরে হয়ে থাকলেও সম্প্রতি তাঁরা এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার পেয়েছেন। অন্য দিকে, শনিবার সন্ধ্যায় কাঁথিতে সিপিএমের ডিওয়াইএফ, এবিটিএ ও এবিপিটিএ-র পক্ষ থেকে সুনিয়া-কাণ্ডের প্রতিবাদে মৌনী মিছিল কাঁথি শহর পরিক্রমা করে। মিছিলের নেতৃত্ব দেন রাজ্যের প্রাক্তন কারিগিরী শিক্ষামন্ত্রী চক্রধর মেইকাপ।
অন্য দিকে, রাজ্যজুড়ে নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে মেদিনীপুরেও প্রতিবাদ সভা-মিছিল করেন বামপন্থী বিশিষ্টজনেরা। রবিবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশে এই সভা আয়োজিত হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্যা ভারতী মুৎসুদ্দি, লেখক কিন্নর রায় প্রমুখ। সভা শেষে মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।
সভায় মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিরোধ গড়ার ডাক দেন ভারতীদেবী। শহরের এই সভার জন্য পুলিশ অনুমতি দেয়নি। ফলে, উদ্যোক্তারা মাইক ব্যবহার করতে পারেননি। ভারতীদেবীর তোপ, “অনুমতি না-দিলেও আমাদের বলা বন্ধ হবে না।”