অরণ্যশহরের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ অগ্রবাল ওরফে রকি খুনের অভিযুক্তদের ভর্ৎসনা করলেন বিচারক।
এক মাস সময় পেয়েও অভিযুক্তরা নিজেদের আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন নি। উপরন্তু, আইনজীবী নিয়োগ করা নিয়ে অভিযুক্তরা আদালতে পরস্পর বিরোধী কথা বলছেন। যে কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিভাসরঞ্জন দে অভিযুক্তদের কার্যত ভর্ৎসনা করে বলেন, “এভাবে চলতে পারে না।”
বিচারক এ দিন নির্দেশে দেন, আগামী ২১ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী না থাকলে সরকারি খরচে আদালতই অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী নিয়োগ করবে। এ দিনেও মূল অভিযুক্ত অশোক শর্মা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে হাজির হন নি। পরবর্তী দিনে অশোককে হাজির করার জন্য আলিপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। রকির পরিজনদের অবশ্য অভিযোগ, বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার জন্যই অভিযুক্তরা সরকারি খরচে আইনজীবী নিতে চাইছেন না।
গত ১০ ডিসেম্বর রকি খুনের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছিল আদালত। ওই দিনেও অশোক শর্মা গরহাজির ছিলেন। ওই দিন অভিযুক্তপক্ষের দুই আইনজীবী মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনেই বিচারক জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তরা চাইলে সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। কিন্তু অভিযুক্ত সুমিত শর্মা, দীনেশ শর্মা ও টোটন রানা-রা নিজেরাই আইনজীবী নিয়োগ করার জন্য আদালতের কাছে সময় চান। এ জন্য ১৩ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন বিচারক।
মঙ্গলবার জেলবন্দি বাকি চার অভিযুক্ত অশোকের স্ত্রী পুনম শর্মা, অশোকের দুই আত্মীয় সুমিত শর্মা ও দীনেশ শর্মা এবং অশোকের পরিচারক টোটন রানাকে আদালতে হাজির করানো হয়। এ দিন বিচারক অভিযুক্তদের প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনাদের আইনজীবী কে? তাঁর নাম কী?’’ জবাবে অভিযুক্ত সুমিত শর্মা বলেন, ‘‘বাড়ির লোক উকিল ঠিক করেছে। আমরা তাঁর নাম জানি না।’’ এবার বিচারকের প্রশ্ন, ‘‘তাহলে আপনাদের আইনজীবী কোথায়, আসেন নি কেন?’’ এবার সুমিতের জবাব, ‘‘বাড়ির লোকজন আজ আসেন নি। তাই বলতে পারব না।’’ আর এক অভিযুক্ত দীনেশ শর্মা বলেন, ‘‘হুজুর উকিল নিয়োগ করার মতো আমাদের টাকা পয়সা নেই।’’ বিরক্ত হয়ে বিচারক বলেন, ‘‘সেই জন্যই তো সরকারি খরচে আপনাদের আইনজীবী দিতে চাইছি।’’