এ বার যুব তৃণমূলের রদবদল ঘিরে রেলশহরে শাসক দলের আকচা-আকচি প্রকাশ্যে এল।
পুরভোটের আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যুব তৃণমূলের রদবদলে সম্মতি দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তাতে নতুন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন জেলা যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি খড়্গপুরের মনোজ তাম্বে। অভিযোগ, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শ্রীকান্ত মাহাতোর তালিকা গৃহীত হওয়ায় তাঁর বিরোধী শিবিরের মনোজের নাম কমিটি থেকে বাদ পড়েছে। শুধু তাই নয়, খড়্গপুর শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর ‘ঘনিষ্ঠ’ যুব নেতা আশিস সেনগুপ্তও আর ওই পদে থাকতে পারবেন না। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শহরে এসে মনোজ তাম্বেকে পাশে বসিয়ে রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট মুখোপাধ্যায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন। তার পরেও মনোজ তাম্বে ও আশিস সেনগুপ্ত বাদ পড়ায় জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রেলশহরে।
গত ২৬ জানুয়ারি জেলার বিভিন্ন ব্লকের সঙ্গেই রেলশহরেও তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি বদল করেছিলেন জেলা যুব সভাপতি তথা বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। তখন সরিয়ে দেওয়া হয় আশিস সেনগুপ্তকে। শ্রীকান্তবাবু জেলা সম্পাদকের পদে দায়িত্ব দিয়েছিলেন রেলশহরের যুব নেতা খড়্গপুরের রাজেশ সিংহকে। রদবদল হয় ব্লক নেতৃত্বেও। যা যুব তৃণমূলেরই একাংশ মেনে নিতে পারছিলেন না বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। শুরু হয় সাংগঠনিক কোন্দলও। পরিস্থিতি সামলাতে খড়্গপুরে বৈঠকে এসেছিলেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট মুখোপাধ্যায়। সেখানে তিনি স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, ‘যুব তৃণমূলের কমিটি গঠনের কাজ চলছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন ছাড়া কোনও কমিটি গঠন করা হবে না। যদি কোনও কমিটি হয়েও থাকে, সেটি মানা হবে না।’
তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের সেই মন্তব্যে স্বস্তি পেয়েছিলেন আশিস সেনগুপ্তরা। কিন্তু, সম্প্রতি রাজ্য যুব তৃণমূল সভাপতির পাঠানো নতুন তালিকা দেখে সেই ‘স্বস্তি’ বদলে গিয়েছে ‘অসন্তোষে’! অন্য দিকে, খুশি শ্রীকান্ত শিবির। রবিবার শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদিত একটি তালিকা হাতে পেয়েছি। সেই তালিকায় জেলা কার্যকরী সভাপতির নাম নেই। শহর ও ব্লকের কিছু সভাপতি পদে রদবদল হয়েছে। খড়্গপুরে আশিস সেনগুপ্ত শহর সভাপতি থাকছেন না।” তালিকায় শহর যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি হিসেবে জহরলাল পালের ছেলে অসিত পালের নাম রয়েছে বলেও জানিয়েছেন শ্রীকান্তবাবু। এই রদবদল মানছেন না বলেই সাফ জানিয়েছেন সদ্য অপসারিত মনোজ তাম্বে। তাঁর কটাক্ষ, “তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা কোনও দিন তৃণমূল করেছে বলে আমার জানা নেই।” পুরভোটের মুখে যুব-র এই আকচা-আকচি রেলশহরে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াবে বলেই রাজনৈতিক মহলের অভিমত।