মমতার সভার জন্য মাথাপিছু চাঁদা ২০ টাকা

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক সভার খরচ তুলতে এ বার নেতা-কর্মীদের থেকে চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। দুই মেদিনীপুরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মমতার সাংগঠনিক সভা রয়েছে আগামী ১৯ ডিসেম্বর। সভাস্থল খড়্গপুরে হওয়ায় তা আয়োজনের ভার পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের উপরে। তারাই সভায় আসতে চাওয়া নেতা-কর্মীদের থেকে মাথাপিছু ২০ টাকা করে চাঁদা (ডেলিগেট ফি) আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূলের বর্ধিত সভায় এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৫
Share:

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক সভার খরচ তুলতে এ বার নেতা-কর্মীদের থেকে চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল।

Advertisement

দুই মেদিনীপুরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মমতার সাংগঠনিক সভা রয়েছে আগামী ১৯ ডিসেম্বর। সভাস্থল খড়্গপুরে হওয়ায় তা আয়োজনের ভার পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের উপরে। তারাই সভায় আসতে চাওয়া নেতা-কর্মীদের থেকে মাথাপিছু ২০ টাকা করে চাঁদা (ডেলিগেট ফি) আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূলের বর্ধিত সভায় এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ ভাবে টাকা তুলে সভা করার চল অবশ্য সে ভাবে তৃণমূলে নেই। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের রেওয়াজ অনুযায়ী বিভিন্ন নেতাকে টাকা জোগাড়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কে, কত টাকা জোগাড় করবেন, তা-ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।

Advertisement

সম্প্রতি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে দুর্গাপুরে সাংগঠনিক সভা করেছেন মমতা। কিন্তু সেই সভার আয়োজনেও এ ভাবে কর্মীদের থেকে চাঁদা আদায় করা হয়নি। তাহলে খড়্গপুরের সভার ক্ষেত্রে হঠাৎ চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত কেন?

মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সব নেতা-কর্মীকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত বড় সাংগঠনিক সভা এর আগে হয়নি। সভার খরচ যাতে সহজেই উঠে আসে, সে জন্য এই সিদ্ধান্ত।”

তিনি জানান, সভায় দুই মেদিনীপুর থেকে প্রায় ৫০ হাজার নেতা-কর্মীর জমায়েত হবে। তাদের সকলের দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মঞ্চ বাঁধা, শামিয়ানা খাটানো, আলো-মাইকের বন্দোবস্ত-সহ যাবতীয় আয়োজন চাঁদা বাবদ আদায় করা টাকা থেকেই হবে।

তৃণমূলের জেলা নেতাদের একাংশ মানছেন, সভা আয়োজনে স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতেই এই পদক্ষেপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “সারদা কেলেঙ্কারিতে দলের মুখ পুড়েছে। তার উপরে দলের নেতাদের বিরুদ্ধেও নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দলনেত্রীর সভা ঘিরে নতুন করে আর কোনও বিতর্ক আমরা চাই না।”

সাংগঠনিক সভা আয়োজনের জন্য তিন সদস্যের অর্থ উপ-সমিতিও গড়া হয়েছে এ দিন। কমিটিতে রয়েছেন তিন জেলা নেতা মৃগেন মাইতি, অজিত মাইতি এবং প্রদীপ পাত্র। তৃণমূল সূত্রে খবর, এ দিন থেকেই একটি খাতায় সভা আয়োজনের খুঁটিনাটি হিসেব রাখতে শুরু করেছেন কমিটির সদস্যরা।

তৃণমূলের আর এক অংশের দাবি, সভার জন্য চাঁদা বাবদ ১০ লক্ষ টাকা উঠলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বুঝিয়ে দেওয়া যাবে কত মানুষ শাসকদলের সঙ্গে আছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের দাবি, “নেত্রীর সভা ঘিরে ইতিমধ্যে উন্মাদনা দেখা দিয়েছে।”

বিরোধীরা অবশ্য মনে করছেন, শাসকদল না এ ভাবে স্বচ্ছতার বার্তা দিতে পারবে, না বোঝাতে পারবে জনভিত্তি। বিজেপি-র জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই জেলারই শালবনিতে জিন্দল প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে আমাদের পাশে জন সমর্থন দেখে যে তৃণমূল আন্দোলন ‘হাইজ্যাক’ করতে চায়, তাদের সঙ্গে ক’জন মানুষ আছেন তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের আবার কটাক্ষ, “শাক দিয়ে তো আর মাছ ঢাকা যায় না। ইতিমধ্যে তৃণমূলের কেউ কেউ জেলে ঢুকেছেন, আরও অনেকে ঢুকবেন। মানুষ সব দেখছেন, বুঝছেনও।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement