মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর একদিন পিছিয়ে গেল। শুক্রবারের পরিবর্তে শনিবার খড়্গপুরে দলের সাংগঠনিক সভায় যোগ দেবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফরসূচি পরিবর্তনের কারণ অবশ্য জানাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায় শুধু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সভা একদিন পিছিয়ে শনিবার হবে।” আর জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী কোনও কাজে দিল্লি যাচ্ছেন বলে শুনেছি। তাই সভা ২০ ডিসেম্বর করা হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল নেত্রীর এই সাংগঠনিক সভার দিন বারবার বদলাচ্ছে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রথমে এই সভা হওয়ার কথা ছিল ২৪ নভেম্বর মেদিনীপুরে। পরে ঠিক হয় খড়্গপুরে ১৯ ডিসেম্বর সাংগঠনিক সভা হবে। গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর সদর বিধানসভায় এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। আগামী বছর রেলশহরে পুরভোটও রয়েছে। সব দিক বিচার করেই এখানে সাংগঠনিক সভা করার সিদ্ধান্ত মমতা নিয়েছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। ইতিমধ্যে সভার প্রস্তুতিতে খড়্গপুর ঘুরে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। প্রথম সভাস্থল বিএনআর ময়দানে সভা করার অনুমতি দেয়নি রেল। শেষে ঠিক হয়েছে চৌরঙ্গির কাছে বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে মমতার সভা হবে।
সভার দিনবদল ঘিরে জল্পনাও শুরু হয়েছে। গত ১২ডিসেম্বর সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আসার কথা ছিল মুকুল রায়ের। ঘটনাচক্রে সেই দিনই পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হন। মুকুলবাবুও জরুরি বৈঠকে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় আর আসেননি। এই সাংগঠনিক সভায় একেবারে বুথস্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধি, বুথ স্তরের নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, কর্মাধ্যক্ষ ও জেলাস্তরের নেতা-নেত্রীদের উপস্থিত থাকার কথা। আগামী বছর পুরসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন, দলের সাফল্য ধরে রাখতে তৃণমূল নেত্রী কী বার্তা দেন সে দিকেই সকলে তাকিয়ে। এ দিকে ফের সভার দিনবদল হওয়ায় কিছুটা সমস্যাও দেখা দিয়েছে। কারণ, তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে প্রতিটি ব্লকে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। লক্ষাধিক পোস্টারও ছাপানো হয়েছে। অনেক জায়গায় তৈরি হয়েছে তোরণ। আবারও নতুন করে পোস্টার সাঁটানো, গেটে তারিখ পরিবর্তন, দ্রুত গতিতে প্রস্তুতি সভা ডেকে সকলকে দিন পরিবর্তন জানানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। একদিন পিছোলেও সেই কাজটি করতে যেমন অতিরিক্ত সময় ব্যয় হবে তেমন ব্যয় হবে অর্থও। দলের এক নেতার কথায়, “কিন্তু কিছুই তো করার নেই। করতেই হবে। একটি দিনের জন্য আবার কয়েক লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।”