মনোনয়নে প্রার্থীকে দেখার জন্য ভিড়, সামাল দিতে নাকাল পুলিশ

তিন দলের মনোনয়ন জমা পড়ল একই দিনে। বুধবার মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি-র মোট ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেন। এ দিন মনোনয়ন জমা দেন মেদিনীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০১:১০
Share:

তখনও মেদিনীপুর কালেক্টরেটে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেননি তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায়। বাবা তারকনাথের ‘সুধা’কে চোখের দেখা দেখতে আধ ঘণ্টা আগে থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন অফিসের কর্মীরা। তাই দেখে এক পুলিশ কর্তা দিলেন ধমক। বললেন, “ঘরে যান। রাস্তা ফাঁকা করুন।” বেজার মুখে অগত্যা কর্মীরা ফিরে গেলেন কাজে।

তিন দলের মনোনয়ন জমা পড়ল একই দিনে।

Advertisement

বুধবার মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি-র মোট ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেন। এ দিন মনোনয়ন জমা দেন মেদিনীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায়। তারকা প্রার্থীকে দেখতে কালেক্টরেটে ভিড়ও জমল। ভিড় সামাল দিতে হিমসিম খেল পুলিশ। এদিনের অভিজ্ঞতা থেকে ভবিষ্যতে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা ঘিরে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

কালেক্টরেটে প্রথমে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী বিমল রাজ। তাঁর মনোনয়ন চলাকালীনই মনোনয়ন জমা দিতে হাজির হন তৃণমূলের দুই প্রার্থী সন্ধ্যা রায় ও উমা সোরেন। একদিকে মনোনয়ন চলায় দু’জনেই অপেক্ষা করেন কালেক্টরেটের সভাকক্ষে। বিদ্যাসাগর হল থেকে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে আসে তৃণমূল। হুডখোলা জিপে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুই প্রার্থী। যাতে কালেক্টরেটে ভিড় না জমে তাই কালেক্টরেটের প্রধান ফটক বন্ধ রাখা হয়েছিল। মহকুমাশাসকের অফিসের গেট দিয়ে প্রার্থীদের ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

Advertisement

মেদিনীপুর কালেক্টরেটে বুধবার মনোনয়ন জমা
দেওয়ার পর মেদিনীপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী বিমল রাজ ।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কাছে মনোনয়ন
জমা দিচ্ছেন ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রভাকর তিওয়াড়ি।

আর সাধারণ মানুষ ও অফিস কর্মীদের ঢোকার জন্য খোলা ছিল জেলাশাসকের বাংলোর দিকের গেট। ওই গেটেও ছিল নিরাপত্তা কর্মী। প্রার্থীদের সঙ্গে মিছিলে থাকা কর্মী সমর্থকেরা যাতে না ঢুকে যেতে পারেন সে জন্য বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছিল। প্রথম ব্যারিকেডেই মিছিল আটকে দেওয়া হয়। ছাড়া হয় কেবল প্রার্থী সহ সঙ্গে থাকা তিনটি গাড়ি। কিন্তু সাধারণের প্রবেশের জন্য একটি গেট খোলাই ছিল। সন্ধ্যা রায় ঢুকছেন শুনেই হুড়মুড়িয়ে সেদিক দিয়ে ঢুকে যান সাধারণ মানুষ থেকে দলের কর্মী সমর্থক থেকে কালেক্টর কর্মীরা।

জেলাশাসকের অফিসের বারান্দায় থিকথিকে ভিড়। সকলেই কাছে থেকে একবার সন্ধ্যা রায়কে দেখতে চান। পুলিশ ভিড় সরাতে গেলেই সক্কলে বলতে থাকেন, ‘আমি কালেক্টরেটের কর্মী’। পুলিশ তাতে কিছুক্ষণ থমকে যায়। এক সময় সকলকেই জোর করে সরিয়ে দেন। সাফ জানিয়ে দেন, কর্মী হলেও কিছু করার নেই। বারান্দা থেকে সরতে হবে। কর্মী হলে কাজে যান। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা চলবে না। কিন্তু কে শোনে কার কথা। মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর সন্ধ্যা রায় বলেন, “আমি আত্মবিশ্বাসী। ভাল ফল হবে। প্রায় সব জায়গায় ঘুরেছি। মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছি, যাতে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল হন। আমিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য সব রকমভাবে চেষ্টা করব।”

সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গে এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দিতে ঢুকেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ, বিধায়ক তথা দলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ-সহ কয়েকজন। রিটার্নিং অফিসারের ঘরে চারজনের বেশি ঢোকা যাবে না। কয়েকজনকে বেরিয়ে আসতে অনুরোধ করা হয়। শেষ পর্যন্ত সভাধিপতি নিজেই বেরিয়ে আসেন। কংগ্রেসের বিমল রাজ ছাড়াও এ দিন ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের প্রার্থী অনিতা হাঁসদাও মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিজেপি-র মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী প্রভাকর তেওয়ারি ও ঝাড়গ্রামের প্রার্থী বিকাশ মুদিও মনোনয়ন জমা দেন।

ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement