মেদিনীপুর কালেক্টরেটে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসছেন বাম প্রতিনিধি দল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারের কাছে নালিশ জানিয়েছে বামফ্রন্ট। সোমবার বাম বিধায়কদের এক প্রতিনিধি দল জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি এবং জেলা পুলিশ সুপার শিসরাম ঝাঁঝোরিয়ার কাছে এক স্মারকলিপি জমা দেয়। বেশ কিছু অভিযোগ জানায়। নেতৃত্বে ছিলেন কেশপুরের বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই, বিনপুরের বিধায়ক দিবাকর হাঁসদা, কেশিয়াড়ির বিধায়ক বিরাম মাণ্ডি। বামেদের দাবি, ভোটের পরও তৃণমূলের লোকজন বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস করছে। ইতিমধ্যে দলের ১০টি অফিস আক্রান্ত হয়েছে। বহু কর্মী- সমর্থকের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকী, কর্মী- সমর্থকদের কাছ থেকে জোর করে টাকাও আদায় করা হচ্ছে। পুলিশ- প্রশাসন অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হবে।
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর কেশপুরের বিধায়ক রামেশ্বরবাবু বলেন, “ভোটের ফল যখন পুরোপুরি বেরোয়নি, তখন থেকেই তৃণমূলের লোকজন হামলা শুরু করে। এই ক’দিনেই আমাদের ১০টি অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। বহু কর্মী- সমর্থক ঘরছাড়া হয়েছেন। পুরো পরিস্থিতির কথা আমরা লিখিত ভাবেই জেলাশাসক- পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। পুলিশ- প্রশাসন দাবিগুলো খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে। আমরা চাই, মানুষ শান্তিতে থাকুক।” গত শুক্রবার লোকসভা ভোটের ফল বেরোয়। ফল বেরোনোর পর থেকেই অবশ্য বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে। বামেদের দাবি, এই ক’দিনে দলের যে ১০টি অফিসে হামলা চালানো হয়েছে, তারমধ্যে ৪টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ৫টি অফিস ব্যাপক ভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলা হয়েছে বড়াই লোকাল কমিটির অফিস, অমরপুর লোকাল কমিটির অফিস, গোয়ালতোড় জোনাল কমিটির অফিস, কনকাবতী লোকাল কমিটির অফিস, এনায়েতপুর লোকাল কমিটির অফিসে। রামেশ্বরবাবু বলেন, “ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়নি। নির্বাচন কমিশন অবাধ ভোট করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভোটের দিন তৃণমূল বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস করছে। বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। ১৪ মে কালেক্টরেটে এক সর্বদলীয় বৈঠক হয়। যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ফল বেরোনোর পর আগামী ৭ দিন কোনও দলই বিজয় মিছিল করবে না। কিন্তু, তৃণমূল সিদ্ধান্ত না- মেনেই বিভিন্ন এলাকায় বিজয় মিছিল করছে। বিজয় মিছিলের নামে গুণ্ডামি চলছে।” তাঁর কথায়, “পুলিশ- প্রশাসনের উচিত, আক্রান্ত মানুষকে রক্ষা করা। ভোটের পর শুধু কেশপুরেই ১৭০০ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। যেন আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। যাঁদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তাঁদের সরকারি ভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছি।” তৃণমূল অবশ্য সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে ওই সব ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা কর্মীদের কোনও রকম প্ররোচনায় পা না দেওয়ারই নির্দেশ দিয়েছি।”