রেল শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি ছিল নতুন বছরে। কিন্তু রফাসূত্র না মেলায় এ বার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিল রেল ঠিকাদার শ্রমিক সংগঠনগুলি। সোমবার বিকেলে খড়্গপুরের বোগদায় ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক ডেকেছিল রেলের তিনটি ঠিকাশ্রমিক সংগঠন। আইটাক, আইএনটিটিইউসি এবং সিটুর প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। কিছু ঠিকাদার না এলেও নিমাই দাস মণ্ডল, গৌতম হাজরা, উজ্জ্বল সেনগুপ্তের মতো ঠিকাদাররা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ঠিকাদাররা সম্মত না হওয়ায় ২ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রমিক সংগঠনগুলি।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়্গপুর ডিভিশনের হাওড়া, টাটানগর, ভদ্রক শাখা পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ঠিকাশ্রমিক রয়েছেন। ট্র্যাক মেরামত, প্ল্যাটফর্ম তৈরি, শেড বানানো, পাইপলাইনের মতো নানা কাজ করেন তাঁরা। এঁদের অধিকাংশই সিটু, আইটাক অথবা আইএনটিটিইউসি-র মতো শ্রমিক সংগঠনের সদস্য। এ বছর শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ২১২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩১২ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন। গত ডিসেম্বরে দু’দফায় এ নিয়ে বৈঠকে বসে ঠিকাদার ও শ্রমিক সংগঠনগুলি। কিন্তু সুরাহা হয়নি। তারপর এ দিনের বৈঠকও হল নিষ্ফলা।
এই পরিস্থিতিতে রেল ও ঠিকাদার উভয় পক্ষকে চাপে ফেলতে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেন শ্রমিক নেতারা। আইটাকের পক্ষে বিপ্লব ভট্ট বলেন, “আশা ছিল এ দিনের বৈঠকে একটা সমাধানের পথ বেরোবে। ঠিকাদার সংস্থাগুলি মজুরি বৃদ্ধির আশ্বাস দিতে পারেনি। ২ ফেব্রুয়ারি আমরা ধর্মঘটে যাচ্ছি।” তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেতা মহাদেব দাসেরও বক্তব্য, “শ্রমিকদের নতুন বছরে কিছুটা হলেও মজুরি বৃদ্ধি হয়। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থাগুলি বাড়তি মজুরি দিতে চাইছে না। ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কিছু না হলে আমরাও ধর্মঘটে যাব।”
ঠিকদারদের তরফে নিমাই দাস মণ্ডলের যুক্তি, “আমরা রেলের থেকে যে দরে বরাত পাই, তাতে প্রতি বছর মজুরি বাড়ালে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। রেলের সঙ্গে আলোচনা না করে মজুরি বাড়ানো সম্ভব নয়।” ২৮ জানুয়ারি রেলের সঙ্গে বসার চেষ্টা করবেন বলেও জানান তিনি। খড়্গপুরে ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা প্রধান নিয়োগকর্তা হওয়ায় শ্রমিকদের আইনি দিকগুলি দেখি। কিন্তু মজুরি বৃদ্ধির বিষয় ঠিকাদারের।”