বিষ মেশানোর ঘটনায় বাজেয়াপ্ত গাড়ি-মোবাইল

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ঢুকে পানীয় জলে বিষ মেশানোর চেষ্টার ঘটনার তদন্তে নেমে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা মনোজ থাম্বের বাড়ি থেকে একটি গাড়ি, দু’টি মোবাইল ফোন, এবং দু’টি কন্টেনার বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। গাড়িটির আবার রেজিস্ট্রেশনই হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জলে বিষ মেশানোর চেষ্টার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনই গ্রেফতার হয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০০:৫২
Share:

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ঢুকে পানীয় জলে বিষ মেশানোর চেষ্টার ঘটনার তদন্তে নেমে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা মনোজ থাম্বের বাড়ি থেকে একটি গাড়ি, দু’টি মোবাইল ফোন, এবং দু’টি কন্টেনার বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। গাড়িটির আবার রেজিস্ট্রেশনই হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জলে বিষ মেশানোর চেষ্টার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনই গ্রেফতার হয়েছেন। একজন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সতীশ গুপ্ত। অন্যজন যুব তৃণমূল নেতা মনোজ থাম্বে। ধৃতেরা এতদিন পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষে বুধবার দু’জনকে ফের মেদিনীপুরের সিজেএম মঞ্জুশ্রী মণ্ডলের এজলাসে হাজির করে নিজেদের হেফাজতে চায় পুলিশ। বিচারক তাঁদের দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

Advertisement

পুলিশের দাবি, ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে। সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব বলেন, “একটা বড়সড় ষড়যন্ত্র ধরা পড়েছে। এ ক্ষেত্রে পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়। বিষ কোথা থেকে এল, কী ভাবে এল, এ ভাবে খুন করার উদ্দেশ্যই বা কি, পুলিশ তদন্তে সেই সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যে পুলিশ কিছু তথ্য পেয়েছে।”

ঘটনাটি গত ১৬ জুলাইয়ের। নিরাপত্তার জাল ভেঙে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ঢুকে পানীয় জলে বিষ মেশাতে গিয়ে ওই দিন হাতেনাতে ধরা পড়েন সতীশ। পরে সতীশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মনোজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা মনোজ যুব তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। মাস কয়েক আগে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তাঁকে এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এক সময় তৃণমূল যুবার জেলা সভাপতিও ছিলেন তিনি। সতীশ ছিলেন মনোজের ছায়াসঙ্গী। বিড়ম্বনায় পড়ে অবশ্য দায় ঝেড়ে ফেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় থেকে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি শ্রীকান্ত মাহাতো, সকলেই দাবি করেন, সব ঘটনায় দলকে জড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। কেউ অপরাধ করলে শাস্তি পাবেন। মনোজ দলেরও কেউ নয়।

Advertisement

আগেই ধৃত দু’জনের কাছ থেকে দু’টি করে মোট চারটি বিষের প্যাকেট উদ্ধার হয়েছে। মনোজের কাছ থেকে কিছু গাঁজাও উদ্ধার হয়েছে। কী ধরনের বিষ ব্যবহার করা হয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য ওই চারটি প্যাকের নমুনা ‘সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি’-তে (এফএসএল) পাঠানো হয়েছে। পুলিশের এক সূত্রে খবর, চারটি প্যাকেটের মধ্যে দু’টি প্যাকেটে হলুদ রঙের পাউডারের মতো পদার্থ রয়েছে। অন্য দু’টি প্যাকেটে সাদা রঙের পাউডারের মতো পদার্থ রয়েছে। রেলশহরের একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, মনোজ এক বা একাধিক পুলিশ- কর্তাকে খুন করার ষড়যন্ত্র করছেন। ফোনে আড়ি পেতেই এই তথ্য পায় পুলিশ। অবশ্য সেই ষড়যন্ত্র যে এমনটা হতে পারে, তা বুঝতে পারেনি পুলিশ। তবে মনোজের গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দু’জনের ‘ভয়েস রেকর্ড’ও পরীক্ষার জন্য ‘সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি’- তে (এফএসএল) পাঠানো হচ্ছে। ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন ওঠে। পরে কার্যালয়ের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। নতুন করে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, শুধুমাত্র ধৃত দু’জন মিলেই এই পরিকল্পনা করেননি। ঘটনায় আরও কয়েকজন যুক্ত রয়েছেন। কয়েকজন মিলেই এই ষড়যন্ত্র করেছেন। পুলিশ অবশ্য জানাচ্ছে, এই ষড়যন্ত্রে আর কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, থাকলে কে কে, তদন্তে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement