পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ
দিদি আরতি সাহার মারফৎ তরুণী পরিচারিকা পদ্মা মুর্মুর খোঁজ পেয়েছিলেন ভরত খা।ঁ আরতীদেবীই পদ্মাকে মেদিনীপুরে ভাইয়ের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তরুণী পরিচারিকার রহস্য- মৃত্যুর তদন্তে নেমে উঠে এল নতুন সূত্র। পুলিশের কাছে মৃতার দাদা সুশীল মুর্মু অভিযোগ করেন, তাঁর বোনকে দিয়ে অত্যাধিক কাজ করাতেন ভরতবাবুর পরিবারের লোকেরা। বাড়ি যেতে চাইলেও যেতে দিতেন না। এক বছরে মাত্র একবারই বাড়ি যেতে পেরেছিলেন পদ্মা। পদ্মাকে খুন করেই তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ঙ্গলবার বিকেলে ভরতবাবু এবং তাঁর ছেলে সমীর খাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় ভরতবাবুর স্ত্রী আল্পনা খাঁকেও। ধৃত তিনজনকেই বুধবার দুপুরে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক ভরতবাবু ও তাঁর ছেলেকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। যদিও আল্পনাদেবীর চোদ্দো দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।
মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়া টাউন কলোনির বাসিন্দা ভরত খাঁর তিন তলা বাড়ির ছাদ থেকে পদ্মা মুর্মু নামে বছর কুড়ির এক পরিচারিকার অগ্নিদ্বগ্ধ দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। ওই ঘটনার পর বাড়ির মালিককে গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয়রা ভরতবাবুর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পদ্মা বছর খানেক ধরে খাঁ পরিবারে পরিচারিকার কাজ করতেন। ঘটনার খবর পেয়ে শালবনির মৌপালের বাড়ি থেকে মেদিনীপুরে এসে সুশীলবাবু বোনকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হয় সারা বাংলা পরিচারিকা সমিতি। বুধবার সমিতির পক্ষ থেকে মেদিনীপুরে জেলাশাসকের দফতরের সামনে এবং জেলা পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি সংগঠিত করা হয়। সমিতির জেলা সম্পাদিকা জয়শ্রী চক্রবর্তী বলেন, “আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
পুলিশের এক সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি হলুদ রঙের প্লাস্টিক, দু’লিটার কেরোসিন তেল, দেশলাইয়ের বাক্স, পোড়া ছাই, পোড়া চুল। ছাদের এক কোণ থেকে পরিচারিকার দেহ উদ্ধার হয়। ভরতবাবুদের দাবি, তরুণী পরিচারিকা নিজেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। যদিও মৃতার পরিবারের অভিযোগ, পদ্মাকে খুন করে দেহে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, “তদন্ত চলছে। শীঘ্রই রহস্যের জাল খুলবে।”