মিছিলের সামনে বিজেপির জেলা সভাপতির সঙ্গেই অন্তরাদেবী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
সদ্য যাঁরা দলে এসেছেন, তাঁদের পুরোভাগে রেখেই শুক্রবার জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করল বিজেপি। দলের রাজ্য সহ- সভাপতি প্রভাকর তিওয়ারি, জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেই বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন সদ্য সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য। শুধু মিছিল কিংবা বিক্ষোভ অবসস্থানই নয়, জেলা বিজেপির সাত সদস্যের যে দল কালেক্টরেটে গিয়ে জেলাশাসক এবং অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) সঙ্গে দেখা করে দাবিগুলো পেশ করে, সেই দলেও ছিলেন অন্তরাদেবী।
বিজেপির অভিযোগ, লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের লোকজন দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করছে। পুলিশকে জানিয়েও সুরাহা হচ্ছে না। উল্টে পুলিশ আক্রান্তদের নামেই মিথ্যে মামলা করছে বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েতের কাজকর্মেও ব্যাপক দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ। এ সবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবু।
এ দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে এক মিছিল বেরোয়। এলআইসি মোড়, জেলা পরিষদ রোড, পঞ্চুরচক হয়ে জেলাশাসকের দফতর সংলগ্ন কালেক্টরেট মোড়ে এসে পৌঁছয় মিছিল। বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে এখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বড় কোনও গোলমাল হয়নি। বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভেঙে জোর করে কালেক্টরেটের মধ্যে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। সামান্য ধস্তাধস্তি হয়। পরে এখানেই বিক্ষোভ-সভা শুরু হয়।
জেলা বিজেপির সাত সদস্যের এক প্রতিনিধি দল কালেক্টরেটে গিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আর অর্জুন, পরে জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার সঙ্গে দেখা করে। তুষারবাবু, অন্তরাদেবী ছাড়াও দলে ছিলেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বাবলু বরম, সোমনাথ সিংহ প্রমুখ। এ দিন সকাল থেকেই আবহাওয়া মেঘলা ছিল। বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। তার মধ্যেও জেলার বিভিন্ন এলাকার কর্মী-সমর্থকেরা মেদিনীপুরে এসে এই কর্মসূচিতে সামিল হন। তুষারবাবু বলেন, “দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও প্রচুর কর্মী-সমর্থক এসেছেন। আমরা খুশি।”
আগামী দিনে জেলা পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে ধর্নায় বসারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি। তুষারবাবুর অভিযোগ, “পুলিশ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা বিভিন্ন এলাকায় মিটিং-মিছিল করতে চাইলেও অনুমতি দিচ্ছে না।” পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় পাওয়া যায়নি বলেও তাঁর অভিযোগ। তুষারবাবু বলেন, “ফের সময় চাইবো। যদি না মেলে তাহলে আর দরবার করব না, পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ধর্নায় বসবো।” এ দিন জেলাশাসক এবং অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) সঙ্গে দেখা করে অবশ্য সন্তুষ্ট জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। তুষারবাবু বলেন, “দু’জনই আমাদের কথা শুনেছেন। দাবিগুলো খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।”