ফের জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতি দিঘায়

রবিবারের পর ফের সোমবার। পূর্ণিমার কোটালের সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে সোমবার কাঁথি মহকুমার একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জলোচ্ছ্বাসে রামনগর ১ ব্লকের দিঘা, শঙ্করপুর, রামনগর ২ ব্লকের মন্দারমণি, দাদনপাত্রবাড়, অরখবনিয়া, খেজুরি ১ ব্লকের আলাইচক ও কণ্ঠীবাড়ী এলাকায় বহু দোকানঘর ও কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রামনগর ২ ব্লকের কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের অরখবনিয়া গ্রামের প্রায় ৭০০জনকে জলবন্দী অবস্থা থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০২:০৯
Share:

দিঘায় জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে পড়েছে দোকানের চাল। ছবি: সোহম গুহ।

রবিবারের পর ফের সোমবার। পূর্ণিমার কোটালের সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে সোমবার কাঁথি মহকুমার একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জলোচ্ছ্বাসে রামনগর ১ ব্লকের দিঘা, শঙ্করপুর, রামনগর ২ ব্লকের মন্দারমণি, দাদনপাত্রবাড়, অরখবনিয়া, খেজুরি ১ ব্লকের আলাইচক ও কণ্ঠীবাড়ী এলাকায় বহু দোকানঘর ও কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রামনগর ২ ব্লকের কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের অরখবনিয়া গ্রামের প্রায় ৭০০জনকে জলবন্দী অবস্থা থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রামনগর ২ ব্লকের বিডিও প্রীতম সাহা জানান, অরখবনিয়া গ্রামের প্রায় ১০০টি পরিবারের বাড়ি চূড়ান্ত ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ওই এলাকার প্রায় ৭০০ জন বাসিন্দাদের স্থানীয় মিশন-সহ অন্য একটি স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানেই রান্না করে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সোমবার সকালে বিধায়ক অখিল গিরি ও বিডিও প্রীতম সাহা সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দারমণি, সীলামপুর, দাদনপাত্রবাড় ও অরখবনিয়া গ্রামগুলি পরিদর্শনে যান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়।

Advertisement

বিধায়ক অখিল গিরি জানান, মন্দারমণি, সিলামপুর দাদনপাত্রবাড় মৌজার বেশ কিছু এলাকা সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়। এছাড়াও দাদনপাত্রবাড় ও চেঁওয়াশুলি মৎস্যখটিরও ক্ষতি হয়েছে। দাদনপাত্রবাড় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম গিরি জানান, জমা জলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়ালেও বড় রকমের ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র দু’টিই বন্ধ করে দেওয়া হয়। জলোচ্ছ্বাসে দিঘা শহরের উপকূল সংলগ্ন এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ফলে সৈকতের ধারের বেশ কিছু অস্থায়ী দোকান এ দিন ফের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রামনগর ১ ব্লকের বিডিও তমোজিৎ চক্রবর্তী ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাই সার রবিবার শঙ্করপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিদর্শন করেন।

অন্য দিকে, খেজুরি ১ ব্লকের বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের আলাইচক ও কন্ঠীবাড়ি গ্রামে জলোচ্ছ্বাসে কয়েকটি বাড়ির ক্ষতি হয়। জলে ক্ষতি হয় প্রায় ৩০০ বিঘের মতো জমির ফসলেরও। খেজুরি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি বিমান নায়ক জানান, রসুলপুর নদীর জলোচ্ছ্বাসের ফলে ওই দুটি গ্রামে জল ঢুকে ৩০০ বিঘের মতো চাষের জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। খেজুরি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রাবণী বেরা ও বিধায়ক রনজিৎ মণ্ডল আলাইচক ও কন্ঠীবাড়ি গ্রামে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সামগ্রী বন্টন করেন। কাঁথির মহকুমাশাসক সরিৎ ভট্টাচার্য জানান, পূর্ণিমার কোটালের জেরে মহকুমার রামনগর ১ ও ২ ব্লকের উপকূলবর্তী এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়। ফলে বেশ কিছু দোকানপাট ও কাঁচাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলমগ্ন এলাকা থেকে কিছু মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়াও আলাইচক ও কন্ঠীবাড়ী গ্রামে বেশ কিছু ধান জমি ও পুকুর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তবে জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও জীবনহানির খবর পাওয়া যায়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement