ফুটপাথ হচ্ছে শুধু পুরপ্রধানের ওয়ার্ডে, ক্ষোভ

শহরে ফুটপাথ বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে মেদিনীপুরে ফুটপাথ তৈরি শুরু হয়েছে। কিন্তু তা হচ্ছে শুধু পুরপ্রধান প্রণব বসুর ওয়ার্ডে। শুধু রবীন্দ্রনগরে ফুটপাথ হওয়ায় শহরের অন্য এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, শহরের অন্যত্র ফুটপাথ তৈরির কাজ কবে হবে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪২
Share:

মেদিনীপুরের রবীন্দ্রনগরে ফুটপাথ তৈরির কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

শহরে ফুটপাথ বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে মেদিনীপুরে ফুটপাথ তৈরি শুরু হয়েছে। কিন্তু তা হচ্ছে শুধু পুরপ্রধান প্রণব বসুর ওয়ার্ডে। শুধু রবীন্দ্রনগরে ফুটপাথ হওয়ায় শহরের অন্য এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, শহরের অন্যত্র ফুটপাথ তৈরির কাজ কবে হবে?

Advertisement

পুরপ্রধান প্রণববাবু অবশ্য জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ফুটপাথ তৈরির জন্য পুরসভা থেকে পরিকল্পনা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। তবে অর্থ বরাদ্দ হয়নি। তাই শহরে ফুটপাথ তৈরির কাজ শুরু যায়নি। তাহলে আপনার ওয়ার্ডে ফটপাথ হচ্ছে যে? প্রণববাবুর জবাব, “নিজের ওয়ার্ডের উন্নয়নে যে টাকা পেয়েছি, তা থেকেই রবীন্দ্রনগর এলাকায় ফুটপাথ তৈরি করছি।”

মেদিনীপুর শহরের অন্যতম সমস্যা যানজট। শহরের ব্যস্ততা ও পরিধি দুই-ই বাড়ছে। অথচ, ফুটপাথ নেই। বাধ্য হয়ে পথচারীদের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়। জবরদখলের জেরে রাস্তার যা হাল, তাতে আবার চলা দায়। পরিস্থিতি দেখে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোয় ফুটপাথ তৈরির নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটা গত বছর জুলাইয়ের কথা। পরে পুরসভা পরিকল্পনা তৈরি করে। তা রাজ্যে পাঠানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোয় ফুটপাথ তৈরি করতে প্রয়োজন প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে শহরে এসে চুপিসারে রাতের শহর ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে পুরপ্রধান প্রণব বসুকে ডেকে আরও ভাল করে শহর সাজানোর নির্দেশ দেন। জানতে চান, ফুটপাথের কী হল। পুরপ্রধান জানিয়ে দেন, পুরসভা পরিকল্পনা তৈরি করে পাঠিয়ে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো পরবর্তী সময় জেলাশাসকের দফতরেও ওই পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়। অবশ্য এখনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি।

Advertisement

রবীন্দ্রনগরে ফুটপাথ তৈরি শুরু হওয়ায় শহরবাসী ভেবেছিলেন, তাহলে নিশ্চয়ই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। এ বার শহর জুড়েই ফুটপাথ হবে। কিন্তু পরে যখন জানা গেল রবীন্দ্রনগরের ফুটপাথ হচ্চে পুরপ্রধানের উদ্যোগে, তখন অনেকেই আশাহত হয়েছেন। শহরের বাসিন্দা আশিস বসু, তমাল সাহাদের কথায়, “মেদিনীপুরের মতো শহরে ফুটপাথ থাকবে, এটাই প্রত্যাশিত। দিনের পর দিন শহরের রাস্তাগুলো যে ভাবে ছোট হয়ে আসছে তাতে তো পথ চলাই দায়!”

শহরের প্রধান রাস্তার দু’দিকে গজিয়ে উঠেছে দোকান। সঙ্গে রয়েছে বেআইনি পার্কিংয়ের সমস্যা। সদর শহরে মোটামুটি ৩-৪ ফুট চওড়া ফুটপাথ করতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেই সুযোগই নেই। মেদিনীপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোর মধ্যে গোলকুয়াচক-ধর্মা রাস্তাটি বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ। শহরে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। দিনে প্রায় সাড়ে আটশো বাস শহর ছুঁয়ে যাতায়াত করে। যত্রতত্র দাঁড়িয়ে বাস, অটো যাত্রী তোলায় যানজট তীব্র আকার নেয়।

শহরে ফুটপাথ তৈরি যে জরুরি তা মানছেন পুর-কর্তৃপক্ষও। উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “মেদিনীপুরের মতো শহরে ফুটপাথ থাকা দরকার। এ জন্য কিছু রাস্তা সম্প্রসারণ করতে হবে। এ কাজ পুরসভার একার পক্ষে সম্ভব নয়। সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement