মেয়াদ আগেই ফুরিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছিল, এখনই নতুন সভাপতি নির্বাচন করা যাবে না। পুরনো পরিচালন সমিতিই বহাল থাকবে। সেই মতো এত দিন মেদিনীপুরের রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের (গোপ কলেজ) পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন অন্তরা ভট্টাচার্য। অন্তরাদেবী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি। অবশ্য পদে থেকেও কলেজের কোনও অনুষ্ঠানে ইদানীং যোগ দিতে পারছিলেন না তিনি। বৈঠকও ডাকতে পারছিলেন না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। টিচার ইন চার্জ অধ্যক্ষা কৃষ্ণা মাইতির কাছে পদত্যাগপত্রও পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাতে জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
বছর পাঁচেক আগে, বাম আমলে মেদিনীপুরের এই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হন অন্তরাদেবী। তখন তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি। পরিচালন সমিতির সদস্যরাই তাঁকে এই পদে নির্বাচিত করেন। রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূলের অন্দর থেকেই অন্তরাদেবীকে এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি ওঠে।
লোকসভা ভোটের পর সিপিএম ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন অন্তরাদেবী। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। তিনি কলেজের কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারছিলেন না, তেমনি পরিচালন সমিতির বৈঠকও ডাকতে পারছিলেন না। কেমন?
গত অগস্টে কলেজের ৫৮ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন হয়। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন অভিনেত্রী-সাংসদ সন্ধ্যা রায়, বিধায়ক মৃগেন মাইতি, প্রদ্যোত্ ঘোষ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ছিলেন না অন্তরাদেবী। কেন? ঘনিষ্ঠ-মহলে প্রাক্তন সভাধিপতি বলেছেন, ‘কলেজেরই পদস্থ কয়েক জন ফোনে ওই অনুষ্ঠানে যেতে নিষেধ করেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, গেলে না কি অনুষ্ঠানই মাটি হয়ে যেতে পারে! সাংসদ-বিধায়কেরা আসবেন না! শুধুমাত্র আমার জন্য তো কোনও অনুষ্ঠান মাটি হয়ে যেতে পারে না! তাই আগেই জানিয়েছিলাম, অনুষ্ঠান হোক। আমি যাব না।’
ঘনিষ্ঠ-মহলে অন্তরাদেবীর মন্তব্য, “পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে থাকব, অথচ কলেজের অনুষ্ঠানে যেতে পারব না, সমিতির বৈঠকও ডাকতে পারব না, এটা হতে পারে না।” কলেজের এক সূত্রে খবর, মাস দু’য়েক আগে কলেজের এক আবাসিক ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ ওঠে। তখন চেয়েও বৈঠক ডাকতে পারেননি তিনি।
এই পরিস্থিতিতে দিন দু’য়েক আগেই এক প্রতিনিধি মারফত্ পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন সভাধিপতি। এর ফলে, কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।